ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশ থেকে মানবপাচারের সঙ্গে দুটি বিদেশি এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই দুই এয়ারলাইন্সের পাঁচ-সাতজন কর্মকর্তাকে সিআইডির সদর দপ্তরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে মানবপাচারের সঙ্গে বিদেশি দুটি এয়ারলাইন্স জড়িত। যাদের দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই ভিজিট ভিসা বা কনফারেন্স ভিসায় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব ভিসায় কেউ কোনো দেশে গেলে তাদের রিটার্ন টিকিট থাকার কথা। কিন্তু কোনো ব্যক্তি রিটার্ন টিকিট নেননি। এটা এয়ারলাইন্সের ত্রুটি। তাদের কর্মকর্তারা জড়িত। পাচার হওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি এই দুটি এয়ারলাইন্সে গেছেন। আমরা এয়ারলাইন্স দুটির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারাও স্বীকার করেছেন, এমন হওয়ার কথা নয়।’ তবে এয়ারলাইন্স দুটির নাম জানাননি সিআইডি প্রধান।
তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের জড়িত পলাতক ছয় বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘গত ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের কাছে ছয় মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তারে সহায়তা চায়। গত ২৭ নভেম্বর ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে। এখন পর্যন্ত ছয়জনকে পাওয়া গেছে, যাদের সংশ্লিষ্টতা আছে। আরও কেউ বিদেশে তাদের মতো আছে কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
ইন্টারপোল যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে তারা হলেন—মিন্টু মিয়া, তানজিমুল ওরফে তানজিদ, জাফর ইকবাল, নজরুল ইসলাম মোল্লা, শাহাদাত হোসেন ও স্বপন। নজরুলের বাড়ি মাদারীপুরে, শাহাদাতের বাড়ি ঢাকায়, বাকি চারজন কিশোরগঞ্জের। তানজিমুল এখন ইতালিতে আছেন।
মাহবুবুর রহমান জানান, গত ২৬ মে লিবিয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যার পর মানবপাচারের ২৬ মামলার মধ্যে ২৫টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এখন পর্যন্ত ১৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হবিগঞ্জে দায়ের করা একটি মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের মধ্যে ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে বিভিন্ন সময় ৩৮ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়ায় পাচার করা হয়। তাদের ইতালি ও স্পেনে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ার বেনগাজীতে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিপণের জন্য গত ২৬ মে নির্বিচারে গুলি করে ২৬ জনকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় মানবপাচারের অভিযোগে সারা দেশে ২৬টি মামলা হয়। এর মধ্যে সিআইডি বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। বাকিগুলো ভুক্তোভোগীদের পরিবার করে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.