সরওয়ার সাকিব
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ভাঙন কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা। ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ফেলা অব্যাহত রয়েছে তবুও শেষ রক্ষা হচ্ছে না সমুদ্রের বালিয়াড়ির। সাগরের প্রচন্ড ঢেউ ও পানির স্রোতে সৈকতের বালিয়াড়ি সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের আকর্ষণে প্রতিবছর দেশি-বিদেশী লাখো পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করে থাকেন। কিন্তু সৈকতের সৌন্দর্য ও আকর্ষণ এখন আর আগের মতো নেই। প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে গেছে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট। সৈকতের সবচাইতে আকর্ষণীয় লাবনী পয়েন্ট সাগরের করাল গ্রাসে ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। গত ২৫ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় এর আঘাতে ভাঙ্গনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটক রহিম উল্লাহ বলেন,সমুদ্রে ভাঙনের কারণ কারণে সরে যাচ্ছে বালিয়াড়ি যার কারণে খুঁজে পাচ্ছেনা আগের সেই চিরচেনা সমুদ্র সৈকত।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, ভাঙন এলাকায় দ্রুত উন্নত মানের টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে সৈকতের সৌন্দর্য না ফেরালে কক্সবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে পর্যটক। মুখ থুবড়ে পড়বে পর্যটন জোনে গড়ে ওঠা হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে দেশের পর্যটন খাতে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অব্যাহত ভাঙনে একের বিলীন হয়ে যাচ্ছে সৈকতের বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে হুমকির মুখে রয়েছে ঝাউ গাছ, বাগানসহ পর্যটন এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ডায়াবেটিস হাসপাতাল, মোটেল জোনের ১৫-২০টি তারকা মানের হোটেল । একইভাবে কলাতলী, হিমছড়ি, ইনানী ও টেকনাফ সৈকতের মেরিন ড্রাইভে ভাঙন দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙন রোধে একাধিক মেশিন দিয়ে বালু তুলে ভর্তি করা হচ্ছে জিওব্যাগ। ওই জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন রোধের ব্যর্থ চেষ্টা হচ্ছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, সৈকতের প্রাকৃতিক জৈব প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাধা সৃষ্টি করে অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ভেঙে বিলীন হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এ বিষয়ে দীর্ঘ সমীক্ষার মাধ্যমে একটি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন তারা। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমদ বলেন, চলতি মৌসুমে ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে এক কোটি টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগে বালুর বাঁধ দেয়া হয়েছে। নাজিরার টেক থেকে বেলী হ্যাচারী পর্যন্ত সৈকতের ১২ কি.মি এলাকায় প্রায় সাড়ে তিনহাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি একনেকে পাশ হলেই কাজ শুরু হবে। তবে এই প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। উচ্চ আদালতের রায় তোয়াক্কা না করে প্রভবশালীরা সাগর পাড়ে একের পর এক বহু তলা ভবন তৈরির কারণে সাগর তীর ভাঙছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.