বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালের জন্য নতুন নির্দেশনা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

ওয়ান নিউজঃ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনায় ১০টি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার এক অফিস আদেশে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

নির্দেশনাগুলো হলো-

১. বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।
২. সকল বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকতে হবে এবং তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

৩. যে সকল প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে কিন্তু শুধুমাত্র ডায়াগনষ্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে তারা লাইসেন্স প্রাপ্ত ব্যতিরেকে কোনেভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা প্রদান করতে পারবে না।

৪. ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স প্রাপ্ত শুধুমাত্র সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ব্যতীত কোনোভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিষ্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।

৫. বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সকল শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

৬. হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সকল চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. হাসপাতাল, ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন, সার্জারি, প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিষ্ট্রার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

৮. কোনো অবস্থাতেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত, নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ্যানেস্থেসিয়া প্রদান করা যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ অবেদনবিদ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপারেশন, সার্জারি করা যাবে না।

৯. সকল বেসরকারি নিবন্ধিত, লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে লেবর রুম প্রোটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

১০. নিবন্ধিত, লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই অপারেশন থিয়েটার এটিকুয়েট মেনে চলতে হবে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘এখন থেকে সরকারের নির্দিষ্ট শর্ত মেনে বেসরকারি মেডিকেল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে হবে। এর কারন, আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু অসাধু মানুষ সরকারের কোনো রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থের জন্য যত্রতত্র নামমাত্র হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার খুলে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। নিয়মের বাইরে গিয়ে এগুলো আর চলতে পারবে না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো ১ হাজার ২০০টির বেশি প্রাইভেট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিবন্ধন নাই। এদের কাছে ভালো ডাক্তার নাই, নার্স নাই, টেকনিশিয়ান নাই। তাহলে এরা হাসপাতাল চালাচ্ছে কী দিয়ে? এরা রোগী পাচ্ছে কীভাবে? এগুলো আমাদেরকে ভাবতে হবে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, ইতোমধ্যেই এরকম প্রায় ১ হাজারটি অনিবন্ধিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং এরকম অনিবন্ধিত অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোও বন্ধ করার কাজ চলমান রয়েছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি করা নির্দেশনা অমান্য করলে নিবন্ধন বাতিল সহ কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেও সতর্ক করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.