‘বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা’
ওয়ান নিউজঃ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশ এলাকায় বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন হুশিয়ারির কথা জানান।
তিনি গত বছরের একটি ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, গত বছর দোয়েল চত্বরে কোনো একটি দলের কর্মীসদস্যরা অযাচিতভাবে প্রবেশের চেষ্টা চালায় ও দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লাঞ্চিত করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয় কেউ কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারে মূল বেদীর উপরেও উঠে পড়েছিল। যা নিন্দিত হয়েছিল সর্বমহলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বিস্মিত হয়েছিলাম। এবারও যদি এ ধরনের কিছু হয় তা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে আমরা বদ্ধপরিকর। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণসহ আশপাশের সকল এলাকা জুড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রবেশ গেটে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে এবং আগত দর্শনার্থীদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা দেহ তল্লাশী ও হ্যান্ড ব্যাগ চেকিং এর আওতায় আনা হবে। মহিলাদের দেহ তল্লাশীর ক্ষেত্রে প্রতিটি গেটে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, শহীদ মিনার কেন্দ্রীক চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চারস্তরের নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে, শহীদ মিনার বেদী কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, শহীদ মিনার ও আশপাশ (জগন্নাথ হল ক্রসিং, ঢাকা মেডিকেল কলেজ বর্হিবিভাগ, দোয়েল চত্বর, টিএসসি কেন্দ্রিক) পিকেট ও স্ট্রাইকিং এবং মোবাইল প্যাট্রোল মোতায়েন, পলাশী, নীলক্ষেত, বকশী বাজার, চানখারপুল, সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল, হাইকোর্ট প্রাঙ্গন, শাহবাগ মোড় কেন্দ্রিক পিকেট, স্ট্রাইকিং মোতায়েন, শহীদ মিনার কেন্দ্রিক রুফটপ ব্যবস্থাপনা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশ এলাকায় অধিকতর নিরাপত্তার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, স্থাপিত সিসিটিভি সমূহ ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা ও আজিমপুর কবরস্থানে বোম্ব ডিসপোজাল টিম এবং ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ বিশেষ নজরদারির আওতায় আনার লক্ষ্যে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের ভিতরে ও বাহিরে পুলিশ মোতায়েন প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকল্পে শহীদ মিনারের বেদীর আশপাশে সাদা পোষাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে বিশেষ টিম, এসবি ও ডিবির একাধিক টিম মোতায়েন থাকবে। কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণের বাহিরের চতুর্দিকে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে লাইনিং ব্যবস্থা থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতিটি প্রবেশ পথের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে কমিশনার বলেন, সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রতিটি প্রবেশ পথে নিরাপত্তার লক্ষ্যে পিকেট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৃথক পৃথক প্রবেশ ও বর্হিগমন গেইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ পলাশী মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে হয়ে শহীদ মিনারের উত্তর গেট দিয়ে প্রবেশ করবে এবং পূর্ব গেট দিয়ে বের হয়ে রোমানা ক্রসিং হয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে বর্হিগমন করবে। শাহবাগ হতে নীলক্ষেত, পুরাতন হাইকোর্ট হতে দোয়েল চত্বর, চানখারপুল হতে দোয়েল চত্বর, রোমানা ক্রসিং হতে ঢাকা মেডিকেল গেট, শিববাড়ী হতে টিএসসি, পলাশী, জগন্নাথ হল পর্যন্ত হকার উচ্ছেদের জন্য হকার উচ্ছেদ টিম মোতায়েন থাকবে।
ডিএমপি পুলিশের শীর্ষ ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, বিদেশী রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক ও নাগরিকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষে ফায়ার টেন্ডার ও লাইটিং ইউনিট মোতায়েন থাকবে। সাইন্স এনেক্স চত্বরে সাব-কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.