ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এর মধ্যেই আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য লিখিত পরীক্ষার দিন ধার্য করে। কিন্তু করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন পরীক্ষার হলে বসতে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তাই এ নিয়ে করণীয় ঠিক করতে বৈঠকে বসছেন বার কাউন্সিলের পরীক্ষা কমিটি। আগামীকাল রবিবার বিকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে পরীক্ষার তারিখ বদল হবে কি না।
বৈঠকের বিষয়টি শনিবার রাতে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। তিনি পরীক্ষা কমিটিরও সদস্য।
ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। তাই আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব কি করা যায়। ২৬ তারিখ পরীক্ষা হবে না নতুন তারিখ দেয়া হবে আশা করি কালকেই জানতে পারবেন। বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে সবার জন্য নিরাপদে সব কিছু হয় সেই চেষ্টা করবো।’
আপিল বিভাগের রায় প্রতিপালন না করে অনিয়মিত পরীক্ষা গ্রহণ ও খাতা রিভিউ সুবিধা না দেয়াসহ বেশ কিছু দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। আন্দোলনের মুখে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় বার কাউন্সিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হওয়ায় এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা না দিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরীক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও পরীক্ষার্থীরা ভালোভাবে তাদের প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পায়নি। তাছাড়া করোনায় এখনো অনেকে মারা যাচ্ছেন। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। তাই পরিস্থিতি আরও ভালো হলে পরীক্ষা নেয়া উচিত।
একজন পরীক্ষার্থী তার উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কিন্তু বার কাউন্সিল হঠাৎ করেই পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অথচ নিয়মমাফিক তারা পরীক্ষা নিলে একসঙ্গে ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে হতো না। করোনাকালে এত ঝুঁকিও হতো না।
একসঙ্গে এত লোক জড়ো হলে অনেকেই সংক্রমিত হতে পারেন এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আশা করি দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠুভাবে সবাই দিতে পারে বার কাউন্সিল তেমন সিদ্ধান্তই নেবে।’
আরেক পরীক্ষার্থী নাহিদা খানম বলেন, আমার ছোট বাচ্চা, বাসায় বয়স্ক মা। করোনার কারণে এই অবস্থায় এত মানুষের মধ্যে যেতে ভয় করছে। তা ছাড়া পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তারিখ ঘোষণা করেছে। প্রস্তুতির জন্য এটা পর্যাপ্ত না। তাই পরীক্ষা কিছুদিন পিছিয়ে দিলে সবার জন্য ভালো হবে।
আগে শুধু মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) মাধ্যমে আইনজীবীদের সনদ দেয়া হতো। তবে দিন দিন শিক্ষার্থীদের চাপ বাড়তে থাকায় আইনজীবী হতে বর্তমানে নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার ওই তিন ধাপের যেকোনো একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একবার উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তারা দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
তবে দ্বিতীয়বারেও অনুত্তীর্ণ হলে তাদের পুনরায় শুরু থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। সে অনুসারে ২০১৭ সালের ৩৪ হাজার শিক্ষর্থীর মধ্যে থেকে লিখিত পরীক্ষায় দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো বাদ পড়া তিন হাজার ৫৯০ শিক্ষার্থী। ২০২০ সালে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষানবিশ আইনজীবীর মধ্যে এমসিকিউ উত্তীর্ণ আট হাজার ৭৬৪ শিক্ষার্থীসহ সর্বমোট ১২ হাজার ৮৫৮ জন সনদ প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.