প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৯ নভেম্বর
ওয়ান নিউজঃ চলতি বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে। চলবে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রাথমিকে এক লাখ ২৬ হাজার ৬৪ জন এবং ইবতেদায়ীতে আট হাজার ১৪৯ জন শিক্ষার্থী কম অংশ নিচ্ছে।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীতে এবার ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকে ২৮ লাখ চার হাজার ৫০৯ জন এবং ইবতেদায়ীতে দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৬৬ জন পরীক্ষার্থী।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার আজ বুধবার মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্যা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা দু’টি বাতিল বা বহাল রাখা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। সরকার যতদিন চাইবে, ততদিন এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে কবে নাগাদ উন্নীত হবে জানতে চাইলে এ মন্ত্রী বলেন, শিক্ষানীতি-২০১০’র আলোকে ও নির্দেশনা মত প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে অবশ্যই উন্নীত হবে। এ ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত বেশ কিছু সমস্যা এখনও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করেই এগুতে হবে।
দু’মন্ত্রণালয়ের (শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়) দ্বন্দ্বের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করণে বিলম্ব ঘটছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দু’মন্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয়ে মতান্তর থাকতে পারে, তবে মনান্তর নেই। প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করণে আমরা দু’জনই সব না। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন, তাদেরসহ সবার মতামত নিয়েই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়নে যেতে হবে। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।
বিগত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী কমে যাওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নে জবাবে প্রাথমিকের এ মন্ত্রী বলেন, এবারের পরীক্ষার্থীর পরিসংখ্যানটি অনেকাংশেই সঠিক। ভর্তি ও উপবৃত্তি এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদানের ফলে বহু ধরনের অসঙ্গতি বা বাণিজ্য দূর হয়েছে। পরীক্ষার্থী কম বা বেশি হওয়া মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছাধীন নয়। ফলে প্রকৃত সংখ্যাটি পেতে আমাদের সমস্যা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা মনিটরিং করবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইলসহ সব ডিভাইস নিষিদ্ধ থাকবে। প্রতিটি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্য ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। আইন-শৃংখলা রক্ষা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা নিয়োজিত থাকবেন।
পরীক্ষা কেন্দ্রিক অনিয়ম-দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্রিক যত ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হতে পারে, তা চিহ্নিত করে বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিশেষ বার্তা দেয়া হয়েছে। ইতোপূর্বে যারা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জাড়িয়েছেন তাদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। এবারও কেউ ধরা পড়লে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এরপরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
পরীক্ষার সংক্রান্ত তথ্য
পরীক্ষার্থীর সংখ্যা- প্রাথমিকে ১২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮৫ জন ছাত্র এবং ১৫ লাখ চার হাজার ৫২৪ জন ছাত্রী। প্রাথমিকে ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী সংখ্যা দুই লাখ চার হাজার ৫৩৯ জন বেশি। ইবতেদায়ীতে ছাত্র সংখ্যা এক লাখ ৫৩ হাজার ১৫২ এবং ছাত্রীর সংখ্যা এক লাখ ৩৮ হাজার ৪১৪ জন। এ ছাড়া প্রাথমিক ও ইবতেদায়তে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (নানা ধরনের প্রতিবন্ধী) তিন হাজার ৩৩২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
পরীক্ষার সময় ও কেন্দ্র
আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বেশি পাবে। সারাদেশে মোট সাত হাজার ২৭৯টি কেন্দ্রে এবং দেশের বাইরে ১২টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
পরীক্ষার সূচি
১৯ নভেম্বর ইংরেজি, ২০ নভেম্বর বাংলা, ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, ২২ নভেম্বর প্রাথমিক বিজ্ঞান, ২৩ নভেম্বর ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা এবং ২৬ নভেম্বর গণিত বিষয়ে পরীক্ষা হবে প্রাথমিক সমাপনীর।
অপরদিকে, ইবতেদায়ীতে ১৯ নভেম্বর ইংরেজি, ২০ নভেম্বর বাংলা, ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এবং বিজ্ঞান, ২২ নভেম্বর আরবি, ২৩ নভেম্বর কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং ২৬ নভেম্বর গণিত।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.