ইমরান আল মাহমুদ:
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সহ নানা কারণে হুমকিতে রয়েছে কক্সবাজারের পরিবেশ। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগই প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি ঘূর্নিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে জেলার কুতুবদিয়া, সেন্টমার্টিন,মহেশখালী ও উখিয়ার কিছু উপকূলীয় এলাকায় লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।
সেন্টমার্টিন: দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ। ঘুর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে আঘাত হেনেছে সমুদ্র তীরবর্তী স্থাপনাগুলোতে। যার ফলে ভবিষ্যতে সাগরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে এ দ্বীপের বাসিন্দারা।
টেকনাফ ও উখিয়া: সীমান্তবর্তী ও সমুদ্র ঘেষা দুই উপজেলা টেকনাফ ও উখিয়ার কিছু অংশে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ এসব জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য কঠোর নজরদারি রেখেছিলো।
এদিকে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর কিছু কিছু এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় নিম্নাঞ্চল। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে,বছরজুড়ে পাহাড় ও বন ধ্বংস করে বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল বিলুপ্ত ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
তবে সচেতন মহল মনে করছে,প্লাস্টিক দূষণ রোধ, সেন্টমার্টিন দ্বীপে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ,বৃক্ষনিধন সহ পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে এমন সব কাজ থেকে সবাইকে সজাগ হতে হবে। অন্যথায় অচিরে হুমকির মুখে পড়বে কক্সবাজার।
ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে সমুদ্র আর পাহাড়ের মাঝখানে নির্মিত কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর সময় সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে আঘাত হানে মেরিন ড্রাইভ সড়কে। ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের পাটুয়ারটেক অংশে মাটি সরে গিয়ে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে,উখিয়ার সোনারপাড়া পয়েন্টে জোয়ারের পানির ধাক্কায় ঝাউবাগানের অধিকাংশ গাছ মাটিতে বিলীন হয়ে গেছে। সমুদ্র উপকূলীয় এসব ঝাউবন রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।
এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এমনিতেই সাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে উপকূলে ভাঙ্গন বৃদ্ধির পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। চলমান কার্বন নির্গমন কমানো না গেলে আগামী ৮০ বছরের মধ্যে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চলের বিশাল অংশ পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে।
একদিকে জলবায়ু পরিবর্তন, অন্যদিকে পরিবেশের উপর দূষণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃক্ষনিধন,পাহাড় ও বন ধ্বংস, নদ নদী ভরাট,যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ, প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে কক্সবাজার।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.