পেকুয়ার দ্রব্যমূল্যের বাজার ‘যেমন খুশি তেমন’
মো: ফারুক, পেকুয়া:
রমজানে আগেই পেকুয়ার দ্রব্যমূল্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচ, কাচা মরিচ, আদা, রসুন, চোলা, মটর, সেমাই, আটা, ভোজ্যতেল, আলু, গুঁড়ো দুধসহ শাক শবজির বাজার নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রাখতে পেকুয়ার প্রশাসনও নিরব ভূমিকা পালন করছে। মনিটরিং না থাকার সুযোগে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রেতা সাধারনের কাছ থেকে দাম নিচ্ছে যেমন খুশি তেমন ভাবে। দ্রব্যের ভিন্নতার কথা বলে দাম নিচ্ছে একেক দোকানে একেক রকম। এছাড়াও মাংশ, মাছের বাজারে যেমন দাম নিচ্ছে বেশি তেমনি ওজনে দিচ্ছে কম।
সোমবার (১৪ মে) ও মঙ্গলবার (১৫ মে) দু’দিন পেকুয়া আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারসহ আশেপাশের কয়েকটি বাজারে সরেজমিন গিয়ে দ্রব্যমূল্যের বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। বাজার ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে ক্রেতা সাধারণ প্রতিবাদ করার সাহসও দেখাতে পারেনা। মাঝে মধ্যে কিছু লোক প্রতিবাদ করলে তাকে চরমভাবে নাজেহালও করা হয়। এমনকি মারধরও করা হয়। অদৃশ্য কারণে বাজার ব্যবসায়ীদের নেতারাও দাম নিয়ন্ত্রনে তেমন ভুমিকা পালন করতে দেখা যায়নি।
পেকুয়া বাজারে সরোজমিন গিয়ে ক্রেতা সাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি চিনি ৫২ থেকে ৫৫, ডাল ১০০ থেকে ১২০, পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫, শুকনা মরিচ ভারতি ১৬৫, দেশী ১৭৫ আর রাইপুর ১৪৫, চোলা ৭০ আর ৭৫, সেমাই ৪০ থেকে ৫০, মটর ৩৫ থেকে ৪৫, তেল ১০৬ থেকে ১২০, রসুন চাইনা ৮০, ১১০, ১২০, বাংলা ৭৫, আঁদা ৮০ থেকে ৮৫, খেঁজুর ৮০ থেকে ৯০, হলুদ ১২০, চুরা ৪৭, মিটা ৭৫ টাকা দামে ক্রয় করছেন। এছাড়াও শবজির মধ্যে করলা ৪০ থেকে ৫০, ফল ৪০, বেগুন ৩৮, টমেটো ৫০, কাঁচা মরিচ ৫০, আলো ৪০, সিম ৪০, শসা ৩০, লতি ৩৫, ঢেঁরস ৩০, ডিম এক জোড়া ১৩ টাকা। ব্রয়লার ১৫০, লেয়ার ২২০ আর দেশী বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা। গরুর মাংশ ৫০০ থেকে ৬০০টাকা, ৫০০ টাকার নিছে মাছের দাম নাই। এভাবে অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের বাজার চলছে নিয়ন্ত্রনহীনভাবে।
প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়। রোজা সামনে রেখে ও রোজার মাসকে উপলক্ষ করে দাম বাড়ানোর যত রকম কারসাজি আছে, সেটা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় খুচরা ও পাইকারি বাজারে কোনো ব্যবসায়ীই নিয়মের মধ্যে থেকে পণ্য বিক্রি করছে না বলে অভিযোগ। যে যেভাবে পারছে ক্রেতাদের পকেট কাটছে। সব ধরনের চালের দামই বেড়ে চলছে।
বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রথম দিন থেকে লাগাম দিতে না পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না বলেও ক্রেতারা জানিয়েছে। সাধারণ ক্রেতারা আক্ষেপ করে বলেন, সরকার পক্ষ থেকে বিভিন্ন দ্রব্যমূল্য যথেষ্ট মজুদ থাকার পরও দাম বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আর পেকুয়া বাজারের কোন দোকানে দ্রব্যমূল্যের তালিকা টাঙ্গানো হয়নি। রোজায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে এখনই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাজারের এক দোকানদার বলেন, রোজা উপলক্ষে দাম তেমন বৃদ্ধি করা হয়নি। চোলার দাম আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছে। বাকি নিত্যপণ্যের দাম তেমন বাড়েনি বলে তিনি দাবী করেন।
একেক দোকানের দাম একেক রকম কেন শবজির দোকানের এক বিক্রেতার কাছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য ক্রয় করার সময় দামের ভিন্নতার কারণে তাদেরও ভিন্নদামে বিক্রয় করতে হয়।
পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে ওসি সাহেবের সাথে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রন ও বাজারের আইনশৃংখলা রক্ষার্থে ১৬ মে থেকে মাইকিং চলবে। কেউ অতিরিক্ত দাম নেওয়ার কথা জানতে পারলে সাথে সাথে প্রশাসনের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.