পেকুয়াতে সংরক্ষিত বনের বনবিভাগের জব্দকৃত বালি নিলামে দিবে ইউএনও

চট্রগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগ

# ৪ লাখ ৬হাজার ২শত ঘনফুট বালি
# রাজস্ব আদায়ের নামে বালিখেকোদের হাতে দিতে চান জব্দকৃত বালি
মোঃ নেজাম উদ্দিন, কক্সবাজারঃ
কক্সবাজারের পেকুয়া বন বিভাগের জব্দ করা অবৈধ বালি নিলামে বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম। ইতিমধ্যে তিনি বালিরস্তুপ পরির্দশন করে বালিখেকোদের সাথে বৈঠক করে নিলামে দিতে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে বলে রেখেছেন বলেও জানা গেছে। জানা গেছে,কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের মধুখালী নামক সংরক্ষিত বনের গহিন অরন্য থেকে গত বছরের ২৫ মে ৩টি পয়েন্ট থেকে মোট ৪ লাখ ৬হাজার ২শত ঘনফুট বালি জব্দ করে চট্রগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের অধিনে বারবাকিয়া রেঞ্জ । প্রথমটি ৩০ হাজারঘনফুট, ২য়টিতে ২লাখ ১১হাজার ২শত ঘনফুট, ও ৩য়টি ছিল ১লাখ ৬৫ হাজার ঘনফুট। এটি নিয়ে ২০২৩ সালে ইউ ডি ও আর মামলা দায়ের করেন পেকুয়া বারবাকিয়া রেঞ্জ । যার নং ১৭ টইটং অব ২০২২-২০২৩/ ৪৩/ বাবা।
বনবিভাগ বলছে, সংরক্ষিত বন থেকে যেসব বালি জব্দ করা হয় তা যদি প্রাকৃতিকভাবে বিলীন হওয়ার সুযোগ থাকে তা নিলামযোগ্য নয়। যেসব বালি গত বছর জব্দ করা হয়েছে তা বিলীন হওয়ার যোগ্য । বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে আবারো সেইসব বালি প্রকৃতির সাথে মিশে যাবে। যদিও মিশে না যায় তবে তা ডিসপোজ করার কথা রয়েছে । যদি সংরক্ষিত বনের জব্দকৃত বালি নিলাম দেওয়া হয় তবে বনে গাড়ি যাওয়ার জায়গা হলেই সেখান থেকে বালি উত্তোলনকারিরা আরো বালি উত্তোলন করার সুযোগ পাবে ও বনের পরিবেশ নষ্ট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বনবিভাগের জব্দকৃত বালি নিলামে দিতে বালি উত্তোলনকারি, বন মামলা ও হত্যা মামলার আসামী মোহাম্মদ আলম প্রকাশ মাহমুদ মাঝিকে নিয়ে এই মাসের ( মার্চ) ২৭ তারিখ বালিস্তুপকৃত স্থান পরির্দশন করেছে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম। পরির্দশনের আগে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল হককে টেলিফোনে জানানো হয় এই বালি নিলাম দেওয়া হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বালি নিলামে দিয়ে ট্রাক দিয়ে বালি সরিয়ে ফেলার সবকিছু ঠিকটাক করে ফেলেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে গোপনসূত্রে ।
এদিকে বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে । যার স্মারক নং ২২.০১০০০০.৭৪২.১৫০০০.২৪১০০ । যদি সংরক্ষিত বনে বনবিভাগের জব্দকৃত বালি নিলাম করা হয় তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের কাছ থেকে অনুমতি সাপেক্ষে নিলামের ব্যবস্থা করার জন্য চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুল হক জানান, বন বিভাগ সংরক্ষিত বন থেকে গত বছর বালিগুলো জব্দ করে । যেহেতু এই বালি প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টি হলে মাটিতে মিশে যায় ও সংরক্ষিত বনের এইসব জিনিস নিলামে দেওয়ার অনুমতি নেই তাই উপজেলা প্রশাসন যদি আমাদের জব্দককৃত বালি নিলামে দিতে চান তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের কাছ থেকে অনুমতি সাপেক্ষে নিলামের ব্যবস্থা করার জন অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ এই বালির মামলা বিভাগীয় দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে । এখন যদি বালু সরিয়ে ফেলা হয়, তাহলে বিভাগীয় পর্যায়ে আমরা জব্দ করা বালু কীভাবে দেখাব? সেই সঙ্গে যদি সংরক্ষিত বনে যানবাহন প্রবেশ করে তবে বনপ্রাণীর এই অভয় আরণ্য ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জব্দকৃত বালি সরিয়ে ফেলার বিষয় নিয়ে কথা উঠলে গত বৃহস্পতিবার চট্রগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক দেলোয়ার হোসেন এর জব্দকৃত জায়গায় কোন গাড়ি চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন কিনা পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি অকপটে স্বীকার করেন সেখানে কোন গাড়ির যাওয়ার চিহ্ন দেখতে পাননি বলে জানান।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, জব্দকৃত বালি নিলামে দেওয়া হবে। বনবিভাগ এতদিনে তারা কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চেয়েছি । তিনি আরো বলেন, যারা বালি নিলাম থেকে ক্রয় করবেন তাদের ৭২ঘন্টা ময় দেওয়া হবে সরিয়ে ফেলার জন্য । যদি তারা এই সময়ের মধ্যে বালি সরাতে না পারে তবে তা ডিসপোজ করা হবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহীন ইমরানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে যেখানে জব্দকৃত বালি রয়েছে সেখান থেকে নিয়মিত ট্রাকের মাধ্যমে বালি সরানো হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। তারপরেও ইউএনও সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এদিকে চট্রগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বারবাকিয়া রেঞ্জ এর অধিনে মধুখালী একটি সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে লোকজনের যাতায়াত কম থাকায় কিছু কুচক্রি মহল বালি উত্তোলন করে এবং তা বনবিভাগ জব্দ করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে। যদি এই বালি সরানো হয় তবে বনবিভাগ জব্দকৃত বালি কিভাবে দেখাবেন? ওখানে বনবিভাগের কর্মীরা সার্বক্ষনিক পাহারায় রয়েছে । ওখান থেকে কোনভাবেই জব্দকৃত বালি সরানো হয়নি। বনবিভাগ চায় বনের ভারসাম্য রক্ষায় বনে যেন কোন যানবাহন না ডুকে । যদি একবার যানবাহন ডুকতে পারে তবে বন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। জব্দকৃত বালি যদি প্রাকৃতিকভাবে মিশে যেতে দেরি হয় তবে ডিসপোজ করা যেতে পারে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের অনুমতিক্রমে।

 

  1. qweqtttt বলেছেন

    Thank you for the auspicious writeup It in fact was a amusement account it Look advanced to more added agreeable from you By the way how could we communicate

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.