পাঁচ শর্তে জামিন পেলেন রিয়া
ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ অবশেষে মাদক মামলায় জামিন পেলেন রিয়া চক্রবর্তী। আর বুধবার সকালে হাইকোর্টে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। রিয়ার জামিন হলেও জামিন হয়নি তাঁর ছোট ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর। শৌভিকের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত জেলেই থাকতে হবে শৌভিককে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনটিভির সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ শর্তে রিয়াকে জামিন দেওয়া হয়েছে। ১ লাখ রুপির বন্ডে জামিন মঞ্জুর হয় রিয়ার। আগামী ১০ দিন নিয়মিত নিকটবর্তী থানায় হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। তাঁর পাসপোর্ট জমা থাকবে পুলিশের কাছে। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। কোনো সাক্ষীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না তিনি। এ ছাড়া বৃহত্তর মুম্বাইয়ের বাইরে যেতে হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হবে রিয়াকে।
যে পাঁচ শর্তে জামিন পেলেন রিয়া
* ১ লাখ রুপির বন্ডে জামিন মঞ্জুর হয় রিয়ার।
* আগামী ১০ দিন নিকটবর্তী থানায় হাজিরা দিতে হবে।
* পাসপোর্ট জমা থাকবে পুলিশের কাছে। আপাতত দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। পরবর্তী সময়ে আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে যেতে পারবেন।
* কোনো সাক্ষীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।
* মুম্বাইয়ের বাইরে যেতে হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের অনুমতি নিতে হবে।
জামিনে স্বস্তি প্রকাশ করে রিয়ার আইনজীবী মানশিন্ডে বলেন, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তে খুশি। সত্য জয়ী হয়েছে। প্রকৃত সত্য মেনে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারপতি সারং ভি কোতোয়াল।’ বলিউডের প্রখ্যাত এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘কোনো রকম ওয়ারেন্ট ছাড়া বিনা যুক্তিতে আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে রিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এত দিন তাঁকে অনৈতিকভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সিবিআই (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন), ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডাইরেকটরেট) আর এনসিবি (নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো)—এই তিন সংস্থা মিলে নাজেহাল করে ছেড়েছে আমার মক্কেলকে। এসবের শেষ হওয়া দরকার।’
কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন রিয়া চক্রবর্তী। আগেই গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী। সুশান্তের জন্য মাদক নিয়ে আসতেন রিয়া ও শৌভিক। চলত আর্থিক লেনদেনও। তাই ভারতের এনডিপিএস আইনের ২৭ (এ) ধারায় এই ভাইবোনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো। শুরু থেকেই রিয়া বলেছেন, তাঁরা লঘুপাপে গুরুদণ্ডের শিকার হচ্ছেন। রিয়া জানান, সুশান্তের জন্য মাদক আনলেও তিনি কখনো মাদক নেননি।
সে সময় ভারতীয় গণমাধ্যমে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর উপপরিচালক (অপারেশনস) কে পি এস মালহোত্রা বলেছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট এবং অন্য আসামিদের বক্তব্যের ভিত্তিতে রিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকজন উপমহাপরিচালক মুথা অশোক জৈন বলেন, ‘আমরা তাঁকে বুঝেশুনে গ্রেপ্তার করেছি, কারণ আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে।’ রিয়া জামিন পেলেও এই মুহূর্তে একই মামলায় তালোজা জেলে বন্দী রয়েছেন শৌভিক চক্রবর্তী, সুশান্তের হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা এবং পরিচালক দীপেশ সাওয়ান্ত।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার রিয়ার জেল হেফাজতের মেয়াদ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করার নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষ আদালত। ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজ বাসায় সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত সিং রাজপুত। আত্মহত্যার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না সুশান্তের অসংখ্য ভক্ত। সেই তালিকায় আছেন বলিউডের অসংখ্য তারকা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিও। এমনকি বিহার পুলিশের ডিজিও তদন্ত শুরুর পরে আত্মহত্যার কথা মেনে নিতে পারছিলেন না। অন্যদিকে একের পর এক প্রেমে ব্যর্থতা, মাদক, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, নিম্নমুখী ক্যারিয়ার, পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা—সবকিছু সুশান্তকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে দাবি রিয়া চক্রবর্তীর।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.