পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলামের একান্ত সাক্ষাৎকার
গতকাল ২৩শে জানুয়ারী সোমবার ওয়ান নিউজ ডট কম ডট বিডি’র একটি ঠিম কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর এর সহকারি পরিচালকের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং পরিবেশ অধিদফতর এর সহকারি পরিচালক জনাব সরদার শরীফুল ইসলামের সাথে কক্সবাজার জেলার পরিবেশ নিয়ে একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়। তা হুবহু ভিজিটরদের জন্য তুলে ধরা হলো, সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার জনাব নেজাম উদ্দিন।
# কেমন আছেন? উত্তরঃ জ্বি ভাল।
১/ আপনাকে প্রথমেই প্রশ্ন করতে চাই কক্সবাজারের সার্বিক পরিবেশ কেমন?
উত্তরঃ- তেমন ভাল নাই, কারণ কক্সবাজারের লোকজন এখনো সচেতন নয়, লোকজনের ধ্যাণধারণা কম। আর আমার অধিদফতরে মাত্র ছয়জন জনবল নিয়ে কাজ করি, একটা জেলা অফিসে জনবল বেশি যদি হতো তা হলে সার্বক্ষণিক একটা ঠিম বাইরে রাখতে পারতাম এবং কাজ করার আত্নতৃপ্তি পেতাম।
২/ নামে বা বেনামে আপনার অধীনে বেশ কয়েকটি কক্সবাজার কলাতলীতে প্লট আছে এটা কতটুকু সত্য?
উত্তরঃ- আমার কক্সবাজার শহরে বা জেলায় কোন জমি বা জায়গা নেই, যারা বলছে তাদের প্রমাণ নিয়ে আসতে বলুন।
৩/ কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় যেমন রামু, উখিয়া, চকরিয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় কাটা হচ্ছে, এই ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা?
উত্তরঃ হ্যা, এই ব্যাপার গুলো আমার জানা আছে, রামু কাউয়ারখোপ সহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা অভিযান চালিয়েছি কিন্তুু কোন অপরাধীকে আমরা হাতেনাতে ধরতে পারিনাই, তবে আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং বর্তমানে আমরা পরিবেশ অধিদফতর থেকে দুইশত মত মামলা করেছি পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে। আশা করি বাকি গুলো দমন করতে পারবো।
৪/ রামু উপজেলার বহুল আলোচিত কাউয়ারখোপ ৯নং ওয়ার্ড় মেম্বার হাবিবউল্লাহ কর্তৃক পাহাড় কাটার ব্যাপারে আপনি কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন কি?
উত্তরঃ আমি কাউয়ারখোপ এর পাহাড় কাটা নিয়ে প্রতিবেদন চট্রগ্রাম অফিসে পাঠিয়েছি, এখানে শুধু হাবিবুল্লাহ মেম্বার নয় মহিলা মেম্বার আনার কলি ও কাউয়ারখোপ চেয়ারম্যান জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই মামলা করা হবে ।
৫/ রামুর ফতেখাঁরকুল, রাজারকুল এর ছাগলিয়া কাটা এলাকায় পাহাড় কাটা হচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি কতটুকু জানেন?
উত্তরঃ রাজারকুল ইউনিয়নে আমার ঠিম গিয়েছিল হাতে নাতে কাউকে পাইনি তবে যারা পাহাড় কাটছে তাদের নাম ঠিকানা আমরা পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক সত্যতা প্রমাণ পেলে মামলা করা হবে, তদন্তের সার্থে তাদের নাম গুলো উল্লেখ করছি না। তবে আমরা অতিসত্তর এর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
৬/ কক্সবাজার কলাতলীতে পাহাড় কেটে রোহিঙ্গারা বসতি করছে আপনি কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা?
উত্তরঃ আসলে এই রোহিঙ্গা ইস্যুটা আমার একার পক্ষে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়, এজন্য সকলের সহযোগিতা দরকার, কারন এটি সীমান্তর্বতী জেলা যদি সবাই একক ভাবে কাজ করি তা হলে এই রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা যাবে। তবে আমি আমার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিছুদিন আগেও কয়েকজন রোহিঙ্গা কে ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে।
৭/ কলাতলী এলাকায় পরিবেশবাদী সংগঠন বা কিছু সাংবাদিকদের নামে বেনামে পাহাড়ি এলাকায় আপনি তাদের প্লট দিয়েছেন বলে শুনা যায় কতটুকু সত্য?
উত্তরঃ সত্যিকার অর্থে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর চার থেকে পাঁচ বার কলাতলীতে অভিযান চালিয়ে দখল উচ্ছেদ করেছি, যারা উচ্ছেদ হচ্ছে কোন পথ না পেয়ে কিছু সাংবাদিকদের নাম বলিয়ে বেড়াচ্ছে তবে এটার কোন সত্যতা নেই, এবং আমি মনে করি যারা দখল কারি তাদের খুঠি শক্ত করার জন্য সাংবাদিকদের অজান্তে তাদের নাম উল্লেখ করে শক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। এতে অনুরোধ করবো যেন সাংবাদিকগণ আমাকে সাহায্য করবেন।
৮/ কক্সবাজারের কলাতলীতে তারকা মানের হোটেল সী- গার্ল এর বাথরুম ও কিচেন এর পানি সামনের রোড়ে এসে পড়েছে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা, বা তারা কি ছাড়পত্র পেয়েছে কিনা? যদি ছাড়পত্র পায় এতে কি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না?
উত্তরঃ বর্তমানে সী- গার্ল হোটেল এর কোন পরিবেশ অধিদফতর এর ছাড়পত্র নেই, আর সামনের যে বর্জ্য আসছে সে ব্যাপারে সম্পুর্ন পৌরসভা দায়ী, কারন ড়্রেন করে দেওয়া পৌর সভার দায়িত্বে পড়ে আমার নয়,
৯/ কক্সবাজারে ৪৯০টির মত হোটেল মোটেল রয়েছে, কতটি হোটেল মোটেল পরিবেশ এর ছাড়পত্র পেয়েছে এবং কয়টি পায়নি?
উত্তরঃ আমার জানা মতে কক্সবাজারে হোটেল মোটেল তিনশত হবে এর মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ টির অনুমোদন আছে আর দশটার মেয়াদ এখনো আছে বাকি গুলোর কোন অনুমোদন নেই, এদের বিরুদ্ধে তালিকা তৈরী হয়েছে শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে।
১০/ যে সমস্ত হোটেল মোটেল পরিবেশ এর ছাড়পত্র পাননি, এই হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহন করছেন কিনা?
উত্তরঃ তাদের তালিকা তৈরী করেছি পরিবেশ অধিদফতর এর ব্যবস্থা নিবে।
১১/ সেন্ট মার্টিন এর অবৈধ স্থাপনার ব্যাপারে আপনারা কি পদক্ষেপ নিলেন?
উত্তরঃ দেখুন সেন্টমার্টিন কক্সবাজার জেলার জন্য একটি সম্পদ আমরা যদি এটি সুন্দর ভাবে সাজাতে পারি তা হলে সরকার অনেকাংশে লাভবান হবেন, যদি সরকারি অনুমতি নেওয়া জন্য ব্যবস্থা করে ডে-নাইট হিসাব করে টুরিষ্ট পাঠানো হয় তাহলে সরকার অনেক রাজস্ব পেত। এখন যার যেমন ইচ্ছা যাচ্ছে অনুমতি নিয়ে যদি যাওয়ার ব্যবস্থা করে তা হলে কতজন পর্যটক যাচ্ছেন তা হিসাব থাকতো এবং সে হিসাবে সেন্টমার্টিনে সরকার ব্যাবস্হা নিবেন। তা হলে নিয়মে আসতো।
১২/ আপনার মূল্যবান সময়ে আমাদের কে সময় দেয়ার জন্য ওয়ান নিউজ ডট কম ডট বিডি’র পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
উত্তরঃ আপনাদেরকে ধন্যবাদ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.