নীলার সায়েম এখন কাউন্সিলর দিনার স্বামী

ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত (৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড) নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা আবারও বিয়ে করেছেন।  তার স্বামী হলেন সায়েম প্রধান।  যিনি এক সময়ের আলোচিত কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলার স্বামী ছিলেন।

তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এক অনাঢ়ম্বর পরিবেশে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।  এ নিয়ে দিনার একাধিক বিয়ের খবর পাওয়া যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আয়েশা সাখাওয়াত দিনার প্রথম স্বামীর নাম মিন্টু।  তার সঙ্গে দিনার প্রায় এক যুগ সংসার হয়।  বিবাহ বিচ্ছেদের পর সেলিম নামের একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় দিনার।  সেটিও ছাড়াছাড়ি হয়।  এরই মধ্যে কয়েকজন বিএনপি নেতার সঙ্গেও দিনার সখ্যতার খবর পাওয়া গেছে।

গত সপ্তাহে দিনার সঙ্গে সায়েম প্রধানের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।  সায়েম প্রধান আলোচিত সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলার স্বামী ছিলেন।  নীলা সাত খুনের পর প্রধান আসামি নূর হোসেনের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্যও দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি নূর হোসেনের সাবেক গার্লফ্রেন্ড জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা এখন দু-কূল হারাতে বসেছেন।

সাবেক স্বামী সায়েম প্রধানের সঙ্গে তালাক হয়ে গেছে।  এর মধ্যে শেষ ভরসা ছিল নূর হোসেন।  নূর হোসেনের ফাঁসির রায় হয়েছে গত ১৬ জানুয়ারি।


নূরের রায়ের পর নীলা বলেছিলেন, ওর (নূর হোসেনের) কারণেই আমাকে জেল খাটতে হয়েছে।  আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন।  ওরা অপরাধ করার কারণেই ওদের ফাঁসি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নীলা নূর হোসেনের সহযোগিতায় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিকের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

এরপর থেকেই ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে আলোচনায় আসেন তিনি।  নীলাকে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি কিনে দিয়েছিলেন নূর হোসেন।

সেই সঙ্গে বাড়িতে দিয়েছেন দামি আসবাবপত্র।  নূর হোসেনের স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে প্রভাব বিস্তার করতেন তিনি।  কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন নীলা।

এ সময় নীলাকে অনেক বেশি মূল্যায়ন করতেন নূর হোসেন।  তাদের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা ছিল ব্যাপক।  কিন্তু যে যাই বলত তেমন একটা গায়ে মাখেননি নূর ও নীলা।

এক সময় স্বামী সায়েম প্রধানকে ছেড়ে নূর হোসেনের কব্জায় চলে যান নীলা।  স্বাভাবিকভাবেই তারা একসঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে।

কিন্তু এক সময় তাদের সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে।  এ নিয়ে স্বামী সায়েমের সঙ্গে বিরোধ দেখা দিলে ২০১৩ সালের ২৫ জুন সায়েমের সঙ্গে নীলার তালাক হয়।

সাত খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০১৪ সালের ১৮ মে নীলাকে আটক করে পুলিশ।  তবে পরদিনই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।  ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি থেকে জুয়েল নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় এক আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার সঙ্গে নীলার জড়িত থাকার কথা বলেন।  এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৬ মে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন নীলা।

প্রায় আড়াই মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।  তখন সায়েম প্রধান জানান, কারাভোগের সময় নীলা তার কাছে আবার ফিরে যাওয়ার আকুতি-মিনতি করলে সন্তানের দিকে তাকিয়ে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে নীলাকে জামিনে বের করে আনেন।

কিছুদিন তার সঙ্গে ভালোভাবেই নীলার দিন কাটে।  ২০১৪ সালে ঈদুল আজহার ছুটিতে নীলা ও সায়েমসহ পরিবারের লোকজনকে কক্সবাজারে অবকাশ কাটাতে দেখা গেছে।  ওই সময়ে নীলার সঙ্গে সায়েমের ঘনিষ্ঠ ছবিও ফেসবুকে আপলোড করেন নীলা।

কিন্তু কিছুদিন আগে সায়েমের সঙ্গে আবারও নীলার বিরোধ দেখা দেয়।  এরই জের ধরে ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট স্বামী সায়েমকে মারধর করে এবং ওই দিনই তাকে তালাক দেন নীলা।

তখন থেকেই নীলা একাকি জীবনযাপন করছেন।  গত ২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচনে নীলা অংশ নিতে পারেননি।  নির্ধারিত সময়ের পরে যাওয়ায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি তিনি।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.