নিবন্ধন নেই, তবু কেন প্রার্থী ঘোষণা জামায়াতের
ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ বাংলাদেশে মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আর তার আগের রাতেই জামায়াতে ইসলামী মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন নামে তাদের মধ্যসারির এক নেতাকে ঐ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেছে।
কিন্তু দলের নিবন্ধন, এমনকী নির্বাচনী প্রতীক (দাড়িপাল্লা) বাতিল হয়েছে যে দলের, তারা কি নির্বাচন করতে পারবে?
নির্বাচন কমিশন বলছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিল হয়েছে, ফলে তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রার্থী দিতে পারেনা।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিবিসিকে বলেছেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে, সুতরাং তারা দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।”
কিন্তু, তিনি বলেন, কোনো জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর শর্তসমূহ পূরণ করতে পারলে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন লাগবে।
তাহলে জেনেশুনেও কেন জামায়াতে ইসলামী মেয়র নির্বাচন করার ঘোষণা দিল?
দলের নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বিবিসির কাছে দুটো ব্যাখ্যা দিয়েছেন :
এক, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলাম সরকারকে দেখাতে চাইছে তারা বিএনপির সাথে জোটে আর নেই। জামায়াত আশা করছে, এতে সরকারের তাদের ব্যাপারে কিছুটা অনুকূল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হতে পারে।
দুই, এককভাবে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে জামায়াত বিএনপিকে বার্তা দিতে চায় যে তাদের ব্যাপারে বিএনপির সাম্প্রতিক নিরাসক্তি তারা পছন্দ করছে না, এবং সামনের সাধারণ নির্বাচনে শরীক হিসাবে তাদের মূল্যায়ন করতে হবে।
কাগজে কলমে জামায়াত এখনও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক। ফলে জোটের সঙ্গে কোন ধরণের আলোচনা ছাড়াই প্রার্থিতা ঘোষণার বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি বিএনপি। বিষয়টি গতরাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও আলোচিত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
তবে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, ঢাকার আসন্ন উপ-নির্বাচনে কুড়ি দলীয় জোট একক প্রার্থী দেবে।
সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের অনেকেই জানিয়েছেন, নানা ইস্যুতে জোটের প্রধান দুই শরিকের মধ্যে এক ধরণের সংকট ও দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির পর্যবেক্ষক এবং দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবর বলছিলেন, “নানা প্রশ্নে বিএনপির সাথে জামায়াতের মতপার্থক্য আছে, সেগুলো নিয়ে তাদের মনোমালিন্য হতে পারে। তবে এটা খুব প্রকাশ্য বা ব্যাপক কিছু নয়।” মি বাবর মনে করেন জামায়াত শেষ পর্যন্ত জোটের সাথে মিলেই নির্বাচন করবে। সূত্র: বিবিসি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.