নাসিক নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ, ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছে ব্যালট বাক্স

ওয়ান নিউজঃ আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর ) নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নতুন মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দেবেন পৌনে পাঁচ লাখ ভোটার। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বুধবার বেলা ১১টায় শহরের আদালতপাড়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, প্যাড, সিল, অমোচনীয় কালিসহ অন্যান্য উপকরণ পুলিশি পাহারায় পাঠানো হচ্ছে ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রে। এসব সরঞ্জামের মধ্যে সুঁই, সুতা, সুপার গ্লু, স্ট্যাপলার,ভোটার তালিকা, কার্বন পেপার, মোমবাতি, স্কেল, কলমসহ ৬০টির বেশি উপকরণ রয়েছে।

অবাধ সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে থাকবেন ২২ জন করে। নগরে ইতিমধ্যে বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাড়ে পাঁচ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিয়োজিত থাকছে। তবুও শঙ্কা রয়েছে ভোটার ও প্রার্থীরা।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্রগুলো জানিয়েছে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে মাঠে নেমেছে সাড়ে পাঁচ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত সোমবার টহল দিতে দেখা গেছে ২২ প্লাটুন বিজিবির। তবে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাকে ‘বেশি ঝুঁকিপূর্ণ’ বিবেচনা করে সেখানে ‘বাড়তি ফোর্স’ মোতায়েন করা হচ্ছে। বিজিবি সদস্যদের ১০ প্লাটুনই থাকছে সিদ্ধিরগঞ্জে। এছাড়া শহর এলাকায় সাত প্লাটুন ও বন্দর এলাকায় আছে পাঁচ প্লাটুন বিজিবি।

এব্যাপারে জানাতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ জানান, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নগরীতে মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। গোলমাল করার চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে পুরো শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২২ ডিসেম্বর এই নির্বাচনে ভোট গ্রহণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ছিলো ২৪ নভেম্বর। যাচাই-বাছাই ২৬ ও ২৭ নভেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ হয় ৪ ডিসেম্বর। আর ৫ ডিসেম্বর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। বিগত ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনের পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা হয় ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর। এ সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুসারে মেয়াদপুতির্র ৬ মাস বা ১৮০ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সে হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কাউন-ডাউন শুরু হয়েছে গত ৩০ জুন থেকে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.