নভেম্বরেও খুলছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ডেস্ক নিউজ:
করোনা মহামারি বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের সিংহভাগ সময় পার হয়ে গেলেও নভেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনও ইতিবাচক নির্দেশনা নেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র।
অন্যদিকে আগামী ১ নভেম্বর থেকে ৩৯ দিনের জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমি (ন্যাপ)। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী নভেম্বরেও সম্ভবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না। আর সে কারণেই নভেম্বর থেকে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না। নভেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৫ দিন আগেই প্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে হতো। সে হিসেবে গত ১৫ অক্টোবর এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়ার কথা। কিন্তু কোনও ধরনের নির্দেশনা নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
আগামী ১ নভেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর টার্গেটে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা অ্যাকাডেমির (ন্যাপ) তৈরি করা ৩৯ দিনের সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনায় দেখা গেছে, বিদ্যালয় খোলা সম্ভব হলে ১ নভেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৯ দিন চলবে পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের শেষ দিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিলেও তাতে প্রস্তুতি লাগবে ১৫ দিন। কিন্তু সেই সময় খোলা গেলেও শুধু পঞ্চমের শ্রেণি কার্যক্রমও বাস্তবায়ন করা যাবে না। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব মূল্যায়নে অটোপাস দিতে হবে।
সংক্ষিপ্ত এই পাঠ-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না গেলে শ্রেণি মূল্যায়নেরও সুযোগ থাকবে না বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন। ফলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য শ্রেণিতেও দেওয়া হবে অটো প্রমোশন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বরকে দুটো টার্গেট করে দুটি লেসন প্ল্যান তৈরি করেছিলাম। পরিস্থিতি বিবেচনায় নভেম্বর থেকে সংক্ষিপ্ত পাঠ-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কোনও নির্দেশনা নেই। পরিস্থিতি উন্নতি হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি নভেম্বরে স্কুল খোলা না যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী যেটি বলেছেন, আমাদের অটো পাস ছাড়া উপায় নেই।’ মো. আকরাম-আল-হোসেন সম্প্রতি বলেছেন, ‘শীতে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই হিসেবে এ বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।’
এর আগে সিনিয়র সচিব জানিয়েছিলেন, করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা সিঙ্গেল ডিজিটে এলে খোলা যেতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হার ডাবল ডিজিটে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছুটি বাড়ানো বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’ নভেম্বরে খোলার বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশনা দিতে পারেনি। করোনা আক্রান্তের হার কমলেও সিঙ্গেল ডিজিটে এখনও যায়নি। আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গেল ডিজিটে গেলে তখন বোঝা যাবে কবে নাগাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগে জানিয়ে দিয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বার্ষিক মূল্যায়ন হবে স্ব-স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কীভাবে মূল্যায়ন হবে তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়ে দিতে পারেনি কীভাবে মূল্যায়ন হবে। এরইমধ্যে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বার্ষিক পরীক্ষার মূল্যায়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান জানিয়েছেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.