ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের বিচারের দাবীতে শাপলা চত্বরে অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজও বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরের আগে থেকেই শাপলা চত্বরে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে অবরোধের মুখে দুপুরে দেড়টার দিকে শাপলা চত্বর হয়ে সব দিকের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

শিক্ষার্থীদের দেয়া দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
঳দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও সর্বনিম্ন শাস্তি যাবজ্জীবন নিশ্চিত করা;
঳ধর্ষণের মামলায় লিঙ্গভেদে নারীপুরুষ কর্মকর্তা নিয়োগ করা;
঳সালিসি পদ্ধতিতে ধর্ষণের বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করা ও বাদীর নিরাপত্তা-চিকিৎসা নিশ্চিত করা;
঳আগের সব মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা; ইভটিজিং,
঳সাইবার বুলিংসহ সব যৌন নির্যাতন বন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন শিক্ষা ও আত্মরক্ষামূলক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে;
঳দলীয় বা প্রশাসনের কেউ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে এবং মিথ্যা মামলার মাধ্যমে নারী, শিশু বা কাউকে হয়রানি করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ বিষয়ে দুপুরে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ, মতিঝিল বয়েজের একদল শিক্ষার্থী সড়কে নেমে শাপলা চত্বর অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। অবরোধ কতক্ষণ চলবে, সেটা বলা যাচ্ছে না।’

শিক্ষার্থীদের ‘ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন’ ব্যানারের এই বিক্ষোভে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকেও যোগ দিতে দেখা যায়।

এসময় শাপলা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা স্লোগান তোলেন- ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে একসাথে’, ‘প্রীতিলতার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিবস্ত্র করে নারীর শ্লীলতাহানি, সিলেটের এমসি কলেজে তুলে নিয়ে নববধূকে ধর্ষণসহ সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া নারীর ওপর ধর্ষণ-গণধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।

ইতোমধ্যে আন্দোলনকারী বিভিন্ন ছাত্র ও অধিকার সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে ‘মৃত্যুদণ্ড’ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

সর্বোপরি দাবিগুলো নিশ্চিতকরণে সরকারকে লিখিত দিতে হবে এবং এ ব্যাপারে কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশকে রাখতে হবে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.