ডেস্ক নিউজ:
কাজী সহিদ ইসলাম পাপুলের পর দুদকের জালে ফেঁসে যাচ্ছেন আরও ২০ সংসদ সদস্য (এমপি)। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, খাস জমি দখল, ঘুষ নেওয়া, কমিশন ও চাঁদাবাজি ছাড়াও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেয়েছে দুদক, তাদের মধ্যে রয়েছেন—সুনামগঞ্জ-১ আসনের মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, ভোলা-৩ আসনের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, চট্টগ্রাম-১২ আসনের সামশুল হক চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের নজরুল ইসলাম বাবু, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, রাজশাহী-১ আসনের ওমর ফারুক চৌধুরী, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের মাহী বি চৌধুরী ও ভোলা-৪ আসনের আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
এই তালিকায় আরও রয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শরীয়তপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হক, নরসিংদী-২ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটন, যুবলীগ নেতা ও নরসিংদী-৩ আসনের সাবেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি শামসুল হক ভূঁইয়া।
বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, নাটোর-২ আসনের রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, লালমনিরহাট-৩ আসনের আসাদুল হাবিব দুলু, নোয়াখালী-৪ আসনের মো. শাহজাহান, বগুড়া-৩ আসনের আব্দুল মোমিন তালুকদার ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. শহিদুজ্জামান ইসলাম বেল্টু।
এছাড়া, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব ও পটুয়াখালী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘আজ (১১ নভেম্বর) লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সহিদুল ইসলাম, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, তাদের কন্যা ওয়াফা ইসলাম ও সহিদুল ইসলামের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।’
দুদক কমিশনার আরও বলেন, ‘শুধু এমপি পাপুল ও সেলিনাই নন, দুদকের অনুসন্ধানে থাকা অন্যান্য এমপির বিষয়েও আমাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেই বিষয়ে যথাসময়ে রেজাল্ট দিতে পারবো। আমরা কোনো কাজে থেমে নেই। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী চেষ্টা করি যেন, যত তাড়াড়াতাড়ি সম্ভব তাদের আইনে সামনে হাজির করতে। এই ব্যাপারে কোনো বিলম্ব হবে না। তবে টাইম নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনো দল নেই, দল মত, ব্যক্তির ঊর্ধ্বে আমরা কাজ করি। আইন আমাদের যেভাবে নির্দেশে করে, সেভাবেই কাজ করি।’
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বর্তমান ও সাবেক মিলিয়ে যে সব সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে দুদক। বর্তমান কমিশনের মেয়াদেই তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে কমিশন। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-প্রমাণ অনুসারেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কমিশন নেবে।’
দুদক সূত্রে জানা গেছে, অনুসন্ধান শুরুর পর পরই অধিকাংশের এমপিরই দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুদক।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.