নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নিজ পৈতৃক বাড়িতে জায়গা হচ্ছেনা বাড়ির ছোট ছেলে টিপু সুলতানের । পৈতৃক বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে আপন মেঝ ভাই দোস্ত মোহাম্মদ নিজে ও তার মেয়েদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে ভিটে ছাড়া করার পাযতারা করে আসছে । এমন কি তাদের আপন বড়ভাই সঠিক বিচার করতে গিয়ে মেঝভাই দোস্ত মোহ্ম্মদ এর পরিবারের হাতে খুন হয় যা এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে ।
ঘটনাটি ঘটেছে চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড়ের গান্ধিপাড়া গ্রামে।
ঘটনার সুত্রে জানা যায়, গান্ধিপাড়া এলাকার মৃত মাষআর হাফেজ আহমদের তিন ছেলে দীন মোহাম্মদ দোস্ত মোহাম্মদ, টিপু সুলতান, পাঁচ মেয়েদের মধ্যে সমানভাবে বল্টনভাবে করে দেয়। এর মধ্যে ভিটেবাড়ি মোট৭৭ শতক বা ২৩১ কড়া তাদের পিতা জীবিত থাকাকালিন ১৯৯৩ সালে সমানভাগে তিনভাইকে বল্টন করে দেয়। বল্টন করা হয় দক্ষিনে বড়ভাই দীন মোহাম্মদ উত্তরে দোস্ত মোহাম্মদ ও মাঝে টিপু সুলতান। এরপর থেকে তিনভাই যে যার অবস্থানে বাড়িঘর করে বসবাস করতে থাকে । এইভাবে তাদের আপন বড়ভাই তাদের থাকতে বলে এবং তারা বেশ কিছু বছর যার যার অবস্থানে বসবাস করতে থাকে।
পৈতৃক পাওয়া ভিটে বাড়িতে ছোট ছেলে টিপু সুলতান বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকে এর মধ্যে টিপুর ক´বাজারে চাকরি হয়ে গলে সে কক্সবাজার চলে আসে নিজের বাড়িটি বন্ধ করে। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে বন্যা হলে টিপু সুলতানের মেজভাইয়ের বাড়িতে পানি আসলে ছোটভাই টিপু সুলতানের বাড়িতে উঠার অনুরোধ করলে মেঝ ভাই দোস্ত মোহাম্মদের অনুরোধে বাড়িতে থাকতে বলে দোস্ত মোহাম্মদের পরিবারকে।
বন্যা শেষ হয়ে গেলে কয়েকমাস পর টিপু সুলতান দোস্ত মোহাম্মদকে বাড়ি খালি করতে বললে সে টিপুকে উল্টো মারধর করতে আসে এবং সে জানয় এটি তারও বাড়ি তার এবং সে ছাড়তে নারাজ।
টিপুর মেঝ ভাই দোস্ত মোহাম¥দ তার নিজের ভাগের জমি দখলে রেখে তার ছোট ভাইয়ের জমি দখলে নিতে এরপর থেকে মরিয়া হয়ে উঠে ।
শুরু হয় একের পর এক মিথ্যা মামলা।
প্রথমে দোস্ত মোহাম্মদের মেয়ে দিলদার নাজনীন বাদী হয়ে ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ২ফ্রেরুয়ারী২০১৭ সালে অভিযোগ দায়ের করে। এতে প্রধান আসামী করা হয় টিপু সুলতানকে।
২য় মামলা করা হয় চকরিয়া চীপ জুড়িসিয়াল আদালতে ফোজদারী মামলা ১৪৩/৪৪৮/৪২৭/৩৮০/৩২৩/৫০৬/৩৮ ধারায় মামরা করা হয় যার নং সিআর ১১৯৫/২০১৭ এই মামলায় পারিবারের অন্যান্যদের সাথে টিপু সুলতানকে ২নং আসামী করা হয়।মামলার ধারবাহিকতা বজায় রাখতে ও টিপু সুলতানকে হয়রানি করতে ভিটে ছাড়া করার জন্য একের পর এক মামলা করতে থাকে ২০১৮ সালে এসে আবারো দোস্ত মোহাম্মদ বাদী হয়ে চকরিয়া আদালতে আরেকটি মামালা দায়ের করে আপন ভাই্ টিপু সলতানকে আসামী করে। যার মামলা নং ৭৬২/২০১৮। এর পর ২০২১সালে দোস্ত মোহাম্মদ বাদী হয়ে চীফ জুড়িসিয়াল আদালত চকরিয়াতে আরেকটি সিআর ৪৭৪/২০২১ মামলা দায়ের করে
স্থানীয়রা জানান, দোস্ত মোহাম্মদ দুষ্ট প্রকৃতির লোক । একসময় এই ভাই বোনদের কাছ থেকে নিয়ে চলতো। এখন মেয়েরা বড় হয়ে গেলে তারা বিভিন্ন জায়গা চাকরি করছে। হাতে কিছু টাকা আসায় নিজের ভাইকে ভিটে ছাড়া করতে চাইছে। এটি উচিৎ নয়।
দোস্ত মোহাম্মদ এর আপন বোন ইসমত ছরওয়ার খানম জানান, আমাদের বাবা মারা যাওয়ার আগে ভিটেবাড়ি সুন্দরভাবে বল্টন করে গেছেন। কিন্তু আমার ভাই দোস্ত মোহাম্মদ ছোভাইয়ের জমি এইভাবে জবরদখল করা উচিৎ নয়। তাছাড়া ছোভাই টিপু তার ভিটে বাড়িতে প্রচুর টাকা খরচ করেছে। সে কেন তার বাড়ি ছেড়ে দিবে?।
স্থানীয় ফারুক আলম জানান, এই দোস্ত মোহাম্মদ ছোট ভাইয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে তার বসতঘরের জমি দখল করে আছে । নিজের বসতঘর রেখেছে, সাথে ছোটভাইয়ের বসতঘর দখল করে নিজের মেয়েদের দিয়ে মামলা করিয়ে তাকে ভিটে ছাড়া করেছে। ২০১৫ সাল থেকে নিজের ও ছোট ভাইয়ের ভিটে নিজের দখলে রেখেছে।
দোস্ত মোহাম্মদ বোন হাফসা রহমান জানান,আমার বাবা ভিটেবাড়ি আমাদের তিনভাইকে সুন্দরভাবে ভাগ করে দিয়ে গেছেন । বন্যার সময় আমার আরেক ভাই টিপুর বাড়িতে আমার ভাই দোস্ত মোহাম্মদকে আশ্রয় দিয়েছে । আশ্রয় দিয়েছে বলে ছোট ভাইয়ের ঘর দখল করে থাকতে পারেনা। আমরা সঠিক বিচারের মাধ্যমে টিপুর ভিটেঘর ফেরত দিতে আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করছি।
এদিকে ভোক্তভোগি টিপু সুলতান জানান, আমার ১৯৯৩ সালের ভাগভাটোরা মতে যে যার বসতবাড়িতে অবস্থান করে আসছিলাম। আমার মেঝভাই২০১৫ সালে বন্যার সময় তার বাড়িতে পানি উঠলে আমার বাড়িতে আশ্রয় চাইলে আমি না থাকার পরেও তালা ভেঙ্গে তারা আমার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
।
পরবর্তীতে তাদের আমার প্রয়োজনে বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে বাড়িটি তার দাবি করে আমার নামে উল্টো মামলা দায়ের করতে থাকে । আমার বড়ভাই দিন মোহাম্মদ আমার বাবার বল্টনের কথা দোস্ত মোহাম্মদকে জানালে বড়ভাই দিন মোহাম্মদ মেঝভাই দোস্ত মোহাম্মদ এর রোষানলে পড়ে যায়। সর্বশেষ জমি সংক্রান্ত বিরোধ তুলে ২০১৯ সালে ২৭ আগষ্ট দোস্ত মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী সন্তান মিলে দিন মোহাম্মদকে দিনে দুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এবং উপর্যপুরেী ছুরিকাঘাত করে আহত করে। এর ১১দিন পর ৯ সেপ্টম্বর চট্রগ্রাম মেড়িকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। ২৭ আগষ্ট ঘটনা সংঘটিত হলে ঐদিন দিন মোহাম্মদ ্ও বোন ইসমত ছরওয়ার চকরিয়া থানায় দোস্ত মোহাম্মদ এর ছেলে ইমরুলকে প্রধান আসামী করে মোট ৫জনের বিরোদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। । দিন মোহাম্ম্দ মারা গেলে তা মার্ড়ার মামলায় পরিণত হয় ।
ইছমত ছরওয়ার জানান, এই জমির জন্য আমার ভাইদের মধ্যে কোন্দল তৈরি হয়েছে তা ইউনিয়ন পরিষদ চাইলে শেষ করতে পারতো। কিন্তু তা না করে দুপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একপক্ষীয় বিচার ব্যবস্থার কারনে আজ আমার বড়ভাইকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। এখন মামলা পিবিআই কক্সবাজার এর হাতে আছে বলে জানা গেছে।
পিবিআই এর তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, তদন্ত চলমান রয়েছে আমরা আশা করছি অচিরেই এর একটা প্রতিবেদন দাখিল করবো। এব প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
নিহত দিন মোহাম্মদ এর ছেলে মিল্লাত হাফেজী জানান, আমার বাবাকে আমার চাচা,চাচী, চাচাতো ভাই ও চাচাতো বোনেরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে । আমার বাবা শুধু সত্যটুকু তুলে ধরেছেন বলে তাকে তারা সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করে আমি আমার বাবার বিচার চাই।
আমার ছোট চাচা টিপু সুলতানকে মাঝখানে ভিটের জন্য জায়গা দেন আমার দাদা। কিন্তু আমার মেঝ চাচা জোর করে তা কেড়ে নিচ্ছে। দেশে শাসন ব্যবস্থা কি নেই ?। চেয়াম্যানের ওখানে গেলে আমার চাচার মেয়ে দিলদার নাজনীন কেমন করে যেন বিচার ব্যবস্থা তাদের হাতে নিয়ে ফেলে !।
দোস্ত মোহাম্মদ এর মেয়ে দিলদার নাজনীন আকফা জানান,আমার মা আবছির বেগম ও আমার জেটিমা হামিদা বেগমের জন্য আজকের এই ঘটনা। তাদের জন্য আজ আমরা পথে পথে।আমার একমাত্র ভাই জেল হাজতে রয়েছে।
আমরা বেশ কয়েকবার আমার জেঠাতোভাই মিছবাহ উদ্দিন এর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি একটি পারিবারিক মীমাংসায় আসার জন্য। তারা মিমাংসায় আসতে রাজী নয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.