ঝিলংজায় উৎসবের নির্বাচনকে ঘোলাটে করছে নৌকার প্রার্থী -অভিযোগ শফিকের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী টিপু সুলতান ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ ঘোলাটে করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (চশমা) আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম শফিক।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পক্ষে। ইতোমধ্যে ভোটের উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। মানুষ পরিবর্তনের পক্ষ ঐক্যবদ্ধ। চশমা প্রতীকের পক্ষে বৃহত্তর খরুলিয়াসহ ঝিলংজাবাসীর গণজোয়ার সেটি প্রমাণ করে। জনগণের এই জাগরণে দিশেহারা সরকার দলীয় প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দমনে হুমকি, ধমকির পথ বেছে নিয়েছে। নিজেরা ঘটনা করে পরিকল্পিত মিথ্যা মামলা সাজানোর পথে হাঁটছে। আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী সব ধরণের পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র কঠোর হাতে প্রতিহত করা হবে।

রবিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে খরুলিয়াস্থ নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন শফিকুল ইসলাম শফিক।

তিনি বলেন, সাধারণ যে কোন নির্বাচনের প্রার্থীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়। আমার কোন দল নাই। জনগণের ভালোবাসা নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। সাধারণ মানুষই আমার দল ও শক্তি।

আমার সাথে কোন রাজনৈতিক কর্মী বা বড় নেতা না থাকাতে ঠিক মতো প্রচারণা চালাতে দিচ্ছে না। বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। ঠিক মতো অফিস করতে দিচ্ছে না প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

তিনি আরো বলেন, শনিবার (৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টায় আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী টিপু সুলতানের লোকজন। চশমা প্রতীকের ৪জন কর্মীকেও মারধর করেছে।

ঘটনার কথা তুলে ধরে চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিক অভিযোগ করেন, প্রচারণা শেষ করে বাসায় অবস্থান করছি। ঠিক এমন সময়ে সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দে ফোন করে বলেন, আপনি টিপুর পিতা-মাতা ধরে গালমন্দ করেছেন নাকি? বললাম, না। এমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারবেন না। সব অপপ্রচার।

কিছুক্ষণ পর সদর ইউএনও ফোনে বলেন, আপনার নিকট কি বৈধ অস্ত্র আছে? বললাম, আছে। ইউনও বলেন, তা প্রদর্শন করা যাবে না। ব্যবহার করবেন না।

ওসি তদন্ত ও ইউনওর সাথে কথা বলার কিছুক্ষণ পরে খরুলিয়া বাজারে সশস্ত্র লোকজন ফাঁকা গুলি ছুড়ার সংবাদ পাই। যা অনেকে দেখেছে। আজিম, মিজান ও রুহাত নামের ৩জন কর্মীকে মারধর ও নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করে। নিজেরা ঘটনা করে উল্টো নাটক সাজাচ্ছে।

শফিকের দাবি, খরুলিয়ার মানুষ যাতে ভোট দিতে না যায়; আতঙ্কিত হয়, সে ব্যবস্থা করতেছে। ভোটের মাঠে ত্রাণ সৃষ্টি করছে। ভাড়াটে সন্ত্রাসী ব্যবহার করছে। পুরো এলাকার অবস্থা থমথমে। এই মূহূর্তে সাধারণ মানুষ ভীত।

সদর থানা থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঝিলংজা বিট অফিসার এসআই বিভাস কুমার সাহা বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিক।

তিনি বলেন, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা হলো পুলিশ। একজন পুলিশ কর্মকর্তার আচরণ, বিচরণ রাজনৈতিক কর্মীর মতো হতে পারে না। কিন্তু ঝিলংজায় দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারের ভূমিকা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি নৌকার প্রার্থী থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নির্বাচনে পরিবেশকে নষ্ট করতেছেন। যা সরাসরি মাঠে দৃশ্যমান। অতিসত্বর পুলিশ কর্মকর্তা বিভাসকে সরিয়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা স্থলাভিষিক্ত করার দাবি দেন শফিকুল ইসলাম শফিক।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচন দিনদিন ঘোলাটে হচ্ছে। অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। আতঙ্ক কাটাতে না পারলে মানুষ ভোট দিতে যাবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিক বলেন, ভোটের আগে জনগণকে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে প্রশাসনের তৎপরতা জোরদার করা দরকার।

তার ধারণা, প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে জনগণ জীবন ঝুঁকি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে না। জনগণ মনে করলে, পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণাও আসতে পারে। তবে, এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। দলমত নির্বিশেষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আমাদের গণজোয়ারে যুক্ত হচ্ছে। এসব কারণেই মূলত সরকার দলীয়প্রার্থী প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল হক নিজামি, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল সমাজপতি রশিদ আহমদ, মেজ ভাই আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম, আলহাজ্ব কাজি আল আমিন, হামিদুল হক, আয়াত উল্লাহসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.