জননেত্রী সমীপে… : আপনি না থাকলে আমাদের কি হবে ?

শামসুল আলম স্বপন :

জীবন এবং ক্ষমতা এ দুটিই ক্ষণস্থায়ী । আপনি কতদিন বেঁচে থাকবেন এবং ক্ষমতায় থাকবেন আল্লাহ মালুম । আপনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যেমন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, আপনি তেমন উন্নত বাংলাদেশ তথা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। আমরা যারা অনলাইন সাংবাদিকতায় নিবেদিত নি:সন্দেহে তারা আপনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার একান্ত সারথী। আপনি ক্ষমতায় না থাকলে এবং বেঁচে না থাকলে ( কুল্লু নাফসিন যাইকাতুল মওয়ুত)  আমার মত আপনার যারা ভক্ত এবং অনুসারী তাদের কি হবে ? এটা আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন কিনা আমি জানি না ।
আপনার নিশ্চয় মনে আছে ডিটেনশন আইন তৈরী করা হয়েছিল ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারের আমলে । বিরোধী দল এই আইনকে কালাকানুন বলে আখ্যায়িত করেছিল । জাতির জনকের হত্যা করার পর যারা ক্ষমতায় বসে ছিলেন তারা কিন্তু এই আইনটি আপনার দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশী ব্যবহার করেছিলেন। আপনিও বাধ্য হয়ে এই কালাকানুনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন । শেষ পর্যন্ত মেয়াদ শেষে ৭৪র সেই আইনটি বাতিল হয়ে যায়।
আপনার সরকারের আমলে যখন সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরা বাক-স্বাধীনতা পূর্ণ ভাবে ভোগ করছে তখনই সাংবাদিকদের মাথার উপর ঝুলিয়ে দেয়া হলো তথ্য-প্রযুক্তি আইনে ৫৭ধারার খড়গ। এই আইনটি প্রয়োজন ছিল বলে আমার মনে হয় না । কারণ প্রচলিত আইনেই যথেষ্ট শাস্তির বিধান রয়েছে। ৫৭ধারা বলবৎ হওয়ার সাথে সাথে আপনার সব চেয়ে ভক্ত সাংবাদিক যিনি লিখে ছিলে শেখ হাসিনা আমার বোনসেই প্রবীর শিকদার প্রথম পড়লেন এই আইনের যাতা কলে । আপনার হস্তক্ষেপে তিনি রক্ষা পেলেন অবশেষে।
অনলাইন সংবাদ পত্রের মালিকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন (বনপা)র সকল সদস্য আপনার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রসৈনিক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থে আঘাত লাগায় সুযোগ সন্ধানীরা এই সংগঠনের সহ-সভাপতি নির্মল বড়য়া মিলন,সাধারন সম্পাদক রোকমুনুর জামান রনি,মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জুঁই চাকমা এবং কক্সবাজার জেলা বনপার সাংগঠনিক সম্পাদক সরওয়ার আলমসহ ইতোমধ্যে দেশের অনেক সাংবাদিককে ৫৭ধারায় মামলা দিয়ে চরম হয়রানি করা হয়েছে।
এবার ভাবুন আপনার দল ক্ষমতায় নেই । এই আইন যদি বলবৎ থাকে তখন কি হবে আপনার ভক্ত সাংবাদিকদের তারা কি সেদিন পারবে আপনার দলের পক্ষে শক্ত হাতে কলম ধরতে ?
সেদিন তো ক্ষমতাসীনরা সাংবাদিকদের পিষে দিবে ৫৭ধারার যাতাকলে । আপনার সরকারের সফল তথ্যমন্ত্রী আমার পরম শ্রদ্ধেয় বড় ভাই হাসানুল হক ইনু সহ আপনার দলের নেতা-কর্মীরা  ‘৫৭ধারার খড়গ থেকে সেদিন কি রক্ষা পাবেন ?
আপনার তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আপনার একনিষ্ঠ ভক্ত পিআইবির মহা-পরিচালক শাহ আলমগীর, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল কিম্বা শাবান মাহমুদসহ দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সম্পাদক সাংবাদিকরা কি এই আইনকে সমর্থন করেন ? সাংবাদিক নেতারা যদি এই আইনকে সমর্থন না করেন তা হলে এই আইনের প্রয়োজন কি ?
আমার বিশ্বাস আপনার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আস্থা থাকার কারনেই কিন্তু সাংবাদিকরা এই আইন বাতিলের জন্য বড় ধরণের কোন আন্দোলনের ডাক দেয় নি । তার মানে এই নয় যে সাংবাদিকরা এই আইনকে মেনে নিয়েছে। সাংবাদিক প্রবীর শিকদার গ্রেফতার হওয়ার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চরম বিক্ষোভ হয়েছিল এই আইনের বিরুদ্ধে । আপনি তখন দেশের বাইরে।
আপনার ভক্ত সাংবাদিকরা ক্ষতি গ্রস্থ হোক নিশ্চয় আপনি চান না। তাই শ্রদ্ধাবনত ভাবে আপনার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ সাংবাদিকদের উপর থেকে তুলে নিন ৫৭ধারার খড়গ। সাংবাাদিকরা যেন চির দিন আপনাকে স্মরণ করতে পারে শ্রদ্ধার সাথে এই মিনতি টুকু করবো আপনার কাছে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.