জঙ্গি বানিয়ে হত্যা করা হচ্ছে : ফখরুল
ওয়ান নিউজঃ সম্প্রতি রাজধানীর আশকোনায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় সন্দেহজনক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘শুধু এটাই নয়, অসংখ্য এমন ঘটনা ঘটছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এটা গভীর ষড়যন্ত্র। এ লোকগুলোকে তুলে নিয়ে পরবর্তী সময়ে তাদের জঙ্গি বানিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। জঙ্গিবাদকে প্রকাশ করার জন্য তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচার রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে সোমবার এক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, যে কোনো সময় কাউকে তুলে নিয়ে যাবে এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতের অভিযোগে হত্যা করা হবে।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার জঙ্গিবাদ দমনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘অথচ আমরা আগেই বলেছিলাম সমস্যা সমাধানে জনগণ নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি কিন্ত আপনারা (সরকার) আসেননি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদের লেশমাত্র নেই। সরকার আজকে বিভাজন তৈরি করছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ চরিতার্থ করতে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে তারা আন্তরিক নয়। এরা গভীর খেলায় মেতেছে। সেই খেলা দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে তা আমরা জানি না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করা শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতে জঙ্গিবাদ একটি ভয়ঙ্কর সমস্যা। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এর সমধান না করি। তাহলে বাংলাদেশে কোন দিকে যাবে, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়ারে মতো ভাগ্য বরণ করতে হয় কিনা জানি না।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত যান এটা আমরা চাই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সমস্যাগুলো আছে এর সমাধান চাই। তিস্তা নদীর পানি চাই, অভিন্ন ৫৪টি নদীল পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তার্জতিক নদীর আইন অনুযায়ী যে ভাগভাটোয়ার সে হিসাবে যাতে আমরা পানি পাই সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের যাতে অন্যায়ভাবে হত্যা না করা হয়। অন্যান্য বিষয়গুলোর সমাধান করতে হবে। কিন্তু কোনো মতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে নয়।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। কারণ দেশের মানুষ মনে করে একমাত্র নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিরাজমান সংকট নিরসন সম্ভব। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন চায়। বিগত দিনের অভিজ্ঞাতায় বলতে পারি, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই একটি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার চাই।’
জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে আওয়ামী লীগের দুর্বলতা রয়েছে। তাই তারা ইতিহাস বিকৃত করছে। স্বাধীনতার ষোঘণা জিয়াউর রহমান দিয়েছেন এ নিয়ে বির্তক করছে আওয়ামী লীগ।’
‘স্বাধীনতা সংগ্রাম শহীদ জিয়ার ভূমিকা ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপপলস পার্টি (এনপিপি)। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন—বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ২০ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, মোস্তাফিজুর রহমান, আজহারুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.