চট্টগ্রাম মেডিকেলে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন পটিয়ার শিক্ষিকা মিসফা সুলতানা
বিশেষ প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন চট্টগ্রামের পটিয়ার পূর্ব ডেঙ্গামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদের মেয়ে মিসফা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টায় স্কুলে প্রবেশ করেই প্রতিদিনের মতো অফিসকক্ষে যাই টিফিন রাখতে। হঠাৎ দেখি সে (বখাটে) খুন্তি নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসছে। সে আমার মাথায় আঘাত করার উদ্দেশ্যে খুন্তি তুললে আমি হাত বাড়াই। যে কারণে আঘাত মাথায় না পড়ে বাম হাতে পড়ে। প্রাণে বাঁচতে দৌড় দিই। এতেও সে আমায় রেহাই দেয়নি। স্কুলের মাঠে আমাকে ফেলে ডান হাতে দ্বিতীয় আঘাত করে। এর পরই আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে চোখ খুলে দেখি আমার দুই হাত ও এক পায়ে বেন্ডেজ। অবশ হয়ে গেছে পুরো শরীর। শরীরজুড়ে ব্যথা আর যন্ত্রণা।’ স্থানীয় বাসিন্দা বখাটে টুটুল মঙ্গলবার সকালে তার ওপর হামলা চালায়। শনিবার মিসফার দুই হাতে অপারেশন হবে। গ্রেফতার হওয়া টুটুলকে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বুধবার পাঠানো হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে প্রেরণ করেন। বৃহস্পতিবার এর শুনানি হবে। এদিকে টুটুলের বিচারের দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই টুটুল শিক্ষিকা মিসফাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারও টুটুল স্কুলে প্রবেশ করে মিসফা সুলতানাকে উত্ত্যক্ত করে। পরের দিন স্কুল কর্তৃপক্ষ টুটুলের পরিবারকে ডাকে। টুটুল শনিবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা করবে না বলে আশ্বস্ত করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়নি। মিসফার বড় ভাই রুকন উদ্দীন বলেন, ‘উত্ত্যক্তের বিষয়টি তার (মিসফা) কাছ থেকে জানতে পেরে আমরা বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানাই। পরে বখাটের (টুটুল) বড় ভাইসহ তার পরিবার স্কুলে এসে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চায়। ভবিষ্যতে টুটুল এ ধরনের ঘটনা আর করবে না বলে আশ্বস্ত করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মীমাংসা করে দায়িত্ব শেষ করে। বিষয়টি থানায় জানানোর দায়িত্ব থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ করেনি। অভিযোগ পাওয়ার পর যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ ও থানা পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নিত তবে এমন ঘটনা ঘটত না।’
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.