ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় যশোরে থানায় ঝুলিয়ে পেটানোর ঘটনায় তদন্ত কমিটি

ইয়ানুর রহমান : যশোরে ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় থানার মধ্যে ঝুলিয়ে এক যুবককে পেটানোর ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

অভিযোগ রয়েছে, গত বুধবার সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে আবু সাঈদকে আটকের পর দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে দুই পুলিশ কর্মকর্তা। টাকা না দেয়ায় প্রায় ২৪ ঘন্টা আটকে রেখে আবু সাঈদকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানার মধ্যে দুই টেবিলের মাঝে বাঁশ দিয়ে উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানো হয়। এভাবে ঝুলিয়ে রাখার সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে শুক্রবার প্রকাশিত হয়।

 

কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, থানায় মারপিট ও টাকা আদায়ের অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা ভয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বীকার করছে না। তারা বলছেন, পুলিশ ধরে নিয়ে ২৪ ঘন্টা আটকে রেখেছিল। পরে এমনিতেই ছেড়ে দিয়েছে। নির্যাতন কিংবা টাকা-পয়সা লেনদেন হয়নি।

 

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা ভয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে না। সাঈদ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তাই পরিবারের লোকজন ঝামেলায় জড়াতে চায় না। এজন্য পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করছে সাঈদ ও তার পরিবার।

 

পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জানা যায়, আবু সাঈদকে বুধবার রাতে আটক করেন কোতোয়ালি থানার সিভিল টিমের এসআই নাজমুল ও এএসআই হাদিবুর রহমান। পরে তার কাছে ২ লাখ টাকা দাবি করেন ওই দুই কর্মকর্তা। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আবু সাঈদকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানার মধ্যে দুই টেবিলের মাঝে বাঁশ দিয়ে উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানো হয়। পরে রাতেই ছাড়া পায় সাঈদ। ছাড়া পাওয়ার পর আবু সাঈদকে কোথাও দেখা যায়নি।

 

শুক্রবার দুপুরে সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামে আবু সাঈদের বাড়ি গেলে সাঈদের মা রোমেছা বেগম, পিতা নুরুল ইসলাম ও ভাই আশিকুর দাবি করেন, পুলিশ সাঈদকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তবে টাকা-পয়সা লেনদেন কিংবা মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনতিই পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে।

 

ছাড়া পাওয়ার পর প্রথমে আবু সাঈদকে কোথাও দেখা না গেলেও বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সামনে তার দেখা মেলে।

 

সাঈদ দাবি করেন, মাদক ব্যবসার অভিযোগে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে থানায় প্রায় ২৪ ঘন্টা আটকে রেখেছিল। তিনি আরও বলেন, পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবারের লোকজন তদবির করেছিল। টাকা-পয়সা লেনদেন হয়েছে কিনা আমি বলতে পারবো না।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.