গোমাতলীতে আগুনে পুড়িয়ে ভাই-ভাতিজাকে হত্যা!
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ শোবার ঘরে পেট্রল দিয়ে আগুন লাগিয়ে বড় ভাই ও ভাতিজাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর ভাবি ও মা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
সদর উপজেলার পোকখালীর পূর্ব গোমাতলী গ্রামে বুধবার দিবাগত রাতে জসিম উদ্দীনের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার রাতে জসিম উদ্দীন ও শুক্রবার দুপুরে তার ছেলে মো. রিদওয়ানের (আড়াই বছর) মৃত্যু হয়। এছাড়াও নিহত জসিমের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা আশুরা বেগম (২৯) ও মা নূর বানু বেগম (৬৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আগুন দেয়ার ঘটনায় পূর্ব গোমাতলীর মৃত আবুল ফজলের ছেলে জসিমের ছোটভাই মুহাম্মদ রশিদ ভোলাইয়াকে (৩৫) পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে পরিবারের লোকজন।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পোকখালী ইউপির স্থানীয় সদস্য কলিম উল্লাহ জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবার রাতে নিজ কক্ষে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘুমাতে যান প্রবাস ফেরত জসিম উদ্দিন। রাত ১০টার দিকে তার ভাই (রশিদ) মা নূর বানুকে বলে মেঝ ভাই তোমাকে তার রুমে ডাকছে।
তিনি জানান, তার মা জসিমের রুমে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বাহির থেকে দরজাটি বন্ধ করে দেয় ভোলাইয়া। পাকা দালানের কক্ষের জানালা দিয়ে ভোলাইয়া পেট্রল ছুঁড়ে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে কক্ষে থাকা জসিম, মা নুরবানু, স্ত্রী আশুরা ও ছেলে রিদওয়ানের শরীরে আগুন লেগে যায়।
ইউপি সদস্য জানান, দরজা বাহির থেকে বন্ধ থাকায় তারা কেউ কক্ষ থেকে বের হতে পারছিলেন না। পরে আগুনের ধোঁয়া দেখে প্রতিবেশীরা বাড়িতে ঢুকে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়ার মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ছয় মাস আগে সৌদি আরব থেকে আসা ভোলাইয়া পাঁচ একর লবণ চাষ করতেন। তবে কী কারণে মা-ভাই, ভাবি ও ভাতিজার ওপর বর্বর এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানা যাচ্ছে।
জসিমের শ্বশুর আবু ছৈয়দ জানান, ঢাকায় পৌঁছার পর বৃহস্পতিবার রাতে জসিম মারা যান। আর শুক্রবার দুপুরের দিকে মারা যায় নাতি রিদওয়ান। এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে তার মেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা আশুরা ও জসিমের মা নূর বানু।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুজ্জামান বলেন, জসিমের মরদেহ পুলিশ হেফাজতে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিদওয়ানের মরদেহ কক্সবাজার আনা হচ্ছে। ভোলাইয়া পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পারিবারিকভাবে অবমূল্যায়ন করায় ভাইয়ের ঘরে আগুন দিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে ভোলাইয়া।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.