খোলা হোটেল মোটেল জোন, বন্ধ থাকবে পর্যটন স্পট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
করোনার দ্বিতীয় ডেউতে বন্ধ ছিল পৃথিবীর সবচাইতে লং-বীচ এলাকা দেশের সুন্দর পর্যটন নগরী হিসাবে খ্যাত কক্সবাজার । পর্যটন খ্যাত বন্ধ থাকায় সরকার যেমন লোকসানে ঠিক তেমনি স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। পর্যটন খাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা করোনাকালিন হোটেল মোটেল জোন বন্ধ থাকায় তাদের জীবিকার তাগিদে বদলাচ্ছেন পেশা। ফলে পর্যটন খাতে দক্ষ কর্মীর অভাব হতে পারে এমনটি মনে করছে কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুৃকিম খান।
এদিকে শর্তসাপেক্ষে আগামী ২৪ জুন থেকে খুলছে কক্সবাজার পর্যটন জোনের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস। পর্যটন সেবায় যুক্ত অর্ধলক্ষাধিক মানুষের পরিবারের দুর্বিষহ জীবন স্বাভাবিক করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রুম বুকিং দেয়া যাবে না। রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া যাবে না। এছাড়া বন্ধ থাকবে সব পর্যটন কেন্দ্র।
গত সোমবার (২১ জুন) বিকেলে জেলা প্রশাসনের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় পর্যটন সংশ্লিষ্টদের জন্য নেয়া এই সিদ্ধান্তের কথা জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান।
তিনি বলেন, ‘পর্যটন সংশ্লিষ্ট মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউস খুলে দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে গঠন করা হয়েছে একটি মনিটরিং কমিটি। এই কমিটি হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা বেঁধে দিয়েছে। দিক নির্দেশনা সমূহ বাস্তবায়নে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে মনিটরিং কমিটি আবারও বন্ধ করে দেবে হোটেল-মোটেল।।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজারের পর্যটন সেক্টর বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু সব বিচার বিশ্লেষণ করে সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হচ্ছে আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো। স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে পুলিশ-প্রশাসনের চেয়ে হোটেল মোটেল কর্তৃপক্ষের চ্যালেঞ্জ বেশি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। রক্ষা করতে হবে প্রতিশ্রুতি। ব্যবসা করতে হবে নিজের ও অন্যের জীবনকে ঝুঁকিতে না ফেলে। সবাই মিলে নিরাপদে বেঁচে থাকাই কাম্য।’
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে গৃহীত শর্তগুলো হলো- বেড়ানোর উদ্দেশ্যে কোনো পর্যটক রুম বুকিং নিতে পারবে না। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে গৃহীত শর্তগুলো হলো- মাত্র ৫০% কক্ষ বুকিং, রুম সার্ভিস ব্যতিত বন্ধ থাকবে রেস্টুরেন্ট, জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকে কক্ষ ভাড়া দেয়া যাবে না। বন্ধ থাকবে সুইমিংপুল, হোটেলের প্রবেশমুখে জীবানু নাশক স্প্রে ও তাপমাত্র পরিমাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে, লবিসহ সকল কক্ষে হ্যান্ড সেনিটাইজারের ব্যবস্থা করতে হবে, পুরো হোটেলে শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিত করতে হবে। শর্ত ভাঙলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) পঙ্কজ বড়ুয়া, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর সভাপতি আবু মোর্শেদ খোকা, জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের সৈয়দ মুরাদ ইসলাম, কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান, হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস কর্মকর্তা এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহসহ আরো অনেকে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.