খরুলিয়াতে স্বামীহারা তসলিমা ও সন্তানকে বাড়িছাড়া করতে মরিয়া ভাসুর পুত্র ফয়সাল

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কক্সবাজারের খরুরিয়াতে  প্রবাসি স্বামী মারা যাবার পর স্বামীর ঘরে ঠাই হচ্ছে না মৃত প্রবাসি আমান উল্লাহর স্ত্রী সন্তানদের। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা তুলে ধরেন মৃত আমান উল্লাহর স্ত্রী তসলিমা আক্তার।  সাথে ছিলেন ৯ বছরের ছোট শিশু তাসকিয়া আমান আবিদ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৬ এপ্রিল সকালে মৃত ছৈয়দ নুর এর ছেলে মোঃ ফয়সাল(৩৫) মৃত মনির আহমদ এর ছেলে মোহাম্মদ সাঈদ (১৮) আয়েশা ছিদ্দিকা, রুমি আক্তার, মুর্শিদা বেগমসহ একই এলাকার মৃত আমান উল্লাহর স্ত্রী তসলিমা আক্তারের উপর হামলা চালায়। এব্যাপারে গত বছর এপ্রিল মাসে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা হয়েছে যার মামলা নং ১৩/২০২১। মামলার বাদি তসলিমা জানান, এই মামলায় যাদের আসামী করে মামলা করা হয়েছিল তাদের বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন। যাদের এই মামলার আসামী করা হয়েছে তাদের আমি চিনিনা।  যাদের আসামি করে এজাহার জমা দিয়েছিলাম তাদের কিভাবে বাদ দিলো আমি বুঝে উঠতে পারছি না। এখন মামলাটি পূর্ণ তদন্তের জন্য পিবিআই এর হাতে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তারা সঠিক তদন্ত করে আসল রহস্য বের করবে। মামলা হলেও তদন্তে বাদ পাড়ায় আসামিরা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। আসামীরা এখন বীরদর্পে ঘোরাঘুরি করছে এবং আমাকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছে।

ভুক্তভুগী তসলিমা আক্তার আরো জানান,২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল  আমার স্বামী করোণাজনিত অসুস্থতায় সৌদি আরবে মৃত্যুবরণ করেন। আমার স্বামী মৃত্যুর পর থেকে আমি ও আমার একমাত্র কন্যা সন্তান তাসকিয়া আমান আবিদ (০৯) সহ শশুরালয়ে বসবাস করে আসছিলাম। কিন্তু মোঃ ফয়সাল ও তার সঙ্গীয়রা  জোর-পূর্বক আমার স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করবার জন্য প্রায় সময় হুমকি-ধমকি দিয়া আসছিল। আমি ঘর থেকে তাদের কথা মত বাহির ‘না হওয়ায় মোঃ ফয়সালের নেতৃত্বে আমাকে জোরপূর্বক বেশ কয়েকবার মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেন। আমি  ঘরে থাকতে চাইলে হুমকি-ধমকি দেয় যে, ঘর থেকে বের হয়ে না গেলে আমাকে হত্যা করে গুম করে ফেলবে। বিভিন্ন সময় আমার উপর চলে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে সমাজের সরদাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিগণকে শালিস দিলেও তাতে কোন সুরাহা পাইনি। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে  গত বছরের ৬ এপ্রিলে  সকাল আনুমানিক সাড়ে আটটার  সময় তারা বেআইনীভাবে বসত বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে আমার ০৯ (নয়) বছরের কন্যা শিশু সন্তানসহ জিনিসপত্র নিয়ে আমার স্বামীরবাড়ি থেকে  বের করে দিতে আমাকে হুমকি দেয়। আমি  প্রতিবাদ করলে এ সময় মোঃ ফয়সালের নেতৃত্বে  রড দিয়ে আমার ডান হাত ও বাম হাতে আঘাত করে রক্তাক্ত করে। এরপর ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।মুখের বাম পার্শ্বেও রড় দিয়ে আঘাত করে।  মোহাম্মদ সাঈদ চুলের মুঠি ধরে দা দিয়ে চুলের মুঠি কেটে ফেলে এবং দায়ের কাঁধা দিয়ে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ঘাড়ে আঘাত করে ।এবং আয়েশা ছিদ্দিকা   ডান হাতে মারাত্মক কামড় দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।  রুমি আক্তার লাঠি দিয়ে বাম পায়ের রানে ও হাঁটুর নিচে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। তারা  আমার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের ১টি স্বর্ণের চেইন, ৮ আনা ওজনের স্বর্ণের ২টি কানের দুল সর্বমোট ওজন ১ ভরি ৮ আনা ও ১টি স্যামসং মোবাইল  নিয়ে যায়।
ঘটনার একবছর হলেও এখনো আসামিরা অধরা হওয়ার কারণে আমি এখন নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।
এখন বাড়িতে যেন ডুকতে না পারি বাড়িতে তালা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমি ও আমার সন্তান নিয়ে বাড়িতে যেতে পারছি না। আমি চাই আমার সন্তানের ন্যায্য অধিকার।
তদন্ত রিপোর্টে যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের নাম না এসে যাদের আমি চিনি না এমন কিছু মানুষের নাম পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে দেখা গেছে, মামলার তিন নম্বর আসামি আয়েশা সিদ্দিকার মেয়ে সুমাইয়া ছিদ্দিকাকে ৫নং সাক্ষী উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এজাহারে লিখিত মূল আসামি ৫ জনকে বাদ দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

নতুন অন্তর্ভুক্ত হওয়া চার আসামিকে চেনেন না বাদী। পরে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে বলে জান যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত আসামিদের বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না বাদী ও এলাকাবাসী। ঘটনার সঠিক প্রতিকার চান ভিকটিম তছলিমা আক্তার। আশা করছেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.