ওয়ান নিউজ ডেক্সঃ দেশে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে হোটেল লেক সোরে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিএনপির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ‘রাইট টু লাইফ : এ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে ১৫ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য সরকার এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই কারণে তারা আজকে কোনো নিয়ম-কানুন, ন্যায়-নীতি, সংবিধান কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চাইছেন।
তিনি বলেন, আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানাবো- বাংলাদেশে এখন কী হচ্ছে তা নোট করুন। আমরা একটি গণতান্ত্রিক জাতি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। আমি মনে করি বিএনপিকে ছাড়া কোনো নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
বিরোধী দলের ওপর সরকারে নিপীড়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শুধু এনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স নয়, আমাদের হিসেবে ৫শরও অধিক নেতা হারিয়ে গেছেন, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আমাদের হিসেবে ১০ হাজারের অধিক নেতা-কর্মীকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত সারাদেশে আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা করা হয়েছে, ১৮ লাখ মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নানা কৌশলে সম্পূর্ণভাবে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং ফলাফলকে নিজের করায়ত্ত করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, এখন ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না, বিরোধী দলের এজেন্টরা কেন্দ্রে যেতে পারে না।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহের ভোট অনিয়মের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে ‘নির্জন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তার প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার বিষয়গুলো তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মানবাধিকারসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সিরাজুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মানবাধিকার বিষয়ক সচিব মাইক ক্রেমার, ফ্রান্স দূতাবাসের উপ-প্রধান জ্যঁ-পিয়ের পঁশে, ভারতের রাজনৈতিক বিভাগের শান্তনু মুখার্জীসহ কানাডা, সুইডেন, পাকিস্তান, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, জয়নুল আবেদীন, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আবদুল কাইয়ুম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফাহিমা মুন্নী, রুমিন ফারহানা, মীর হেলালউদ্দিন, সারোয়ার হোসেন, সৈয়দ এজাজ কবীর, জি-নাইনের সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ান্থ, আহাদ আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.