কেন বছরে অন্তত দুইবার ডেন্টাল সার্জন বা দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাবেন?

ডাঃ মিম ইকবাল আহমাদ

দাঁত ৩২ টা বলে যারা নিজের অজান্তেই দাঁতের সঠিক যত্ন নেয়া এবং ব্যথা না হলেও ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়াটাকে গুরুত্ব দেন না, তাদের জন্য কিছু তথ্য শেয়ার করি-

বায়োমেডিকেল জার্নালের ২০১৯ সালে প্রকাশিত একটি ক্লিনিক্যাল আর্টিকেলের তথ্য অনুযায়ী, প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝে ২০১০ সালেই সারাবিশ্বে ৩.৯ বিলিয়ন মানুষ পেরিওডোন্টাল ডিজিজ বা দাঁত ও মাঢ়ি সংক্রান্ত রোগ ও জটিলতায় ভুগছে।

এই জার্নালের তথ্য অনুযায়ী, দাঁত ও মাঢ়ি সংক্রান্ত জীবাণু এবং রোগ শরীরের অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগ সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। এই রোগগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, হার্টের রোগ কিংবা হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, শ্বাসনালীর ইনফেকশন, গভর্কালীন জটিলতা, স্নায়ুজনিত রোগ ইত্যাদি!

তথ্যটা পিলে চমকে দেবার মতই ভয়াবহ! তাই নয় কি?

আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার এবং পুষ্টি যেহেতু আমরা মুখ দিয়েই গ্রহণ করি, সেকারণেই এই মুখে পুষ্টি লাভের আশায়ই খুব সহজেই আক্রমণ করে জীবাণু। তাই এই জীবাণু থেকে যেন সংক্রমণ না হয় (যাকে আমরা ইংরেজিতে ইনফেকশন বলি), সেজন্য প্রতিদিন মুখ ও দাঁতের যত্ন নেয়া যেমন জরুরি, ঠিক তেমনি বছরে অন্তত দুইবার ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি। কেননা, অনেক সময় খালি চোখে নিজের দাঁত এবং মাঢ়ি সুস্থ মনে হলেও, এর ভেতরের জটিলতাগুলো কেবল একজন ডেন্টিস্টই আমাদের ধরিয়ে দিতে পারবেন এবং সঠিক উপদেশ দিতে পারবেন।

সুতরাং, বুঝতেই পারছেন “দাঁতে ব্যথা হলেই কেবল ডেন্টিস্টের কাছে যাবেন, নতুবা না” এই প্র্যাকটিস কতটা ভয়াবহ হতে পারে আপনার জন্য?

তাই, বছরে অন্তত দুইবার ডেন্টিস্টের কাছে যাবার প্র্যাকটিস গড়ে তুলুন।

শেষ কথাঃ আপনার বাড়ির আশেপাশে যত ডেন্টাল চেম্বার আছে, সবগুলোতেই যে সত্যিকারের ডেন্টিস্ট বসেন এমনটা ভাবার কারণ নেই। কেননা অনেক হাতুড়ে নিজেদের ডেন্টিস্ট সাজিয়ে বসে থাকেন। তাহলে, বুঝবেন কিভাবে কে আসল ডেন্টিস্ট? এটা বুঝার উপায় হচ্ছে, সেই ডেন্টিস্টের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নাম্বার আছে কিনা জেনে নিয়ে তবেই তার কাছে যান। আর মনে রাখবেন, একমাত্র বিডিএস সম্পন্ন করা ডেন্টিস্টরাই বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন পেয়ে থাকেন।
আপনার হাসি হোক সুন্দর ও সুস্থ।
ভালো থাকবেন।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.