কেন্দ্র ঘোষিত ২মাস পর দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে দৃশ্যমান হচ্ছে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন
জে,জাহেদ ব্যুরোচিফ চট্রগ্রামঃ
৮ বছর ক্ষমতার বাহিরে থাকা দল বিএনপি। দলের নেতাকর্মীদের উজ্জবিত করতে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি হাতে নেয় দলটি।
গত পহেলা জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দলের সদস্য সংগ্রহের দুই মাসব্যাপী কর্মসূচিটি উদ্বোধন করেছিলেন।
সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো এক কোটি। যার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলা উপজেলা কার্যক্রম শুরু করে। অপরদিকে দক্ষিন জেলার কর্ণফুলী,পটিয়া,আনোয়ারা,বোয়ালখালি, সাতকানিয়া,লোহাগড়া,চন্দনাইশ,বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত দুই মাসেও চোখে পড়ার মতো দেখা নেই এ নবায়ন কার্যক্রম।
অনেকের দাবি করে, কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে অনেকটা ঝিমিয়ে রয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।
দলীয় নির্দেশ থাকা সত্বেও কোন উদ্যেগ গ্রহন ও কোন কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএনপি নেতারা । এ বিষয়ে জানতে গেলে উঠে আসে, তৃণমুলে নানা কোন্দল আর দীর্ঘদিন একই পদে থাকা নেতাদের দায়িত্ব অবহেলা আর উদাসীনতায় অনেকটাই দায়ী।
বিএনপিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এক কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় দলটির কেন্দ্র থেকে। জুলাই ও আগস্ট মাস জুড়ে চলে এ নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ।
লক্ষ্য পূরণে পহেলা জুলাই থেকে মাঠে নামার কথা ছিলো। কিন্তু ২মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও চট্রগ্রাম দক্ষিন জেলা ও কর্ণফূলী উপজেলায় সদস্য সংগ্রহের কোন কার্যক্রমই চোখে পড়েনি।
স্বয়ং বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নিজে আগামী দুই মাসে এক কোটি নতুন সদস্য সংগ্রহের টার্গেট বেঁধে দেন। একই সাথে পহেলা জুলাই থেকে দেশব্যাপি সদস্য সংগ্রহের জন্য নেতাকর্মীদের মাঠে নামার নির্দেশনাও দেয়া হয়।
কিন্তু সে কার্যক্রমের তেমন কোন অগ্রগতি নেই দক্ষিন জেলায় । স্থবির হয়ে রয়েছে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমসহ দলীয় প্রচার প্রচারণাও। স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় উদ্যোগের অভাবে বিভিন্ন উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন না হওয়ায় নতুন করে দলটির জন্য সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম এখনও শুরুই করা সম্ভব হয়নি।
শুধু চট্রগ্রাম দক্ষিন জেলার কর্ণফূলী নয়। আশেপাশের উত্তর জেলা ও উপজেলা গুলোতেও বিএনপির এ কার্যক্রমের কোন অগ্রগতি এখনও লক্ষ্য করা যায়নি। তবে কর্ণফূলী থানা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক ইন্জিনিয়ার মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন, কর্ণফুলীতে নির্বাচনী ব্যস্ততার জন্য সদস্য ফরম নবায়ন ও সংগ্রহ অভিযান আপাতত শুরু হচ্ছে না। তবে খুব শ্রীঘ্রেই প্রক্রিয়াটি সমপন্ন করা হবে।
বিএনপির অনেকেই আশঙ্কা করেন, ২০১৬ সালের শেষে মহানগর ও চট্রগ্রাম জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। যে বিরোধ বর্তমানে ও চলমান। এ সমস্যা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি নেতারা।
বিএনপির মহানগর ও দক্ষিন জেলার উভয় কমিটিতেই এ বিরোধ দৃশ্যমান। এ অবস্থায় দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র পক্ষে নতুন সদস্য সংগ্রহ কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে খোদ দলটির কর্মীদের মধ্যেই।
তবে কর্মীরা এমনটা আশঙ্কা করলেও দলের নেতারা তেমনটি মনে করছেন না। তারা জানান, বড় দলের মধ্যে এমন বিরোধ থাকতে পারে। তবে দলের স্বার্থে সবাই এক হয়ে কাজ করে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। মুঠোফোনে দক্ষিন জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আলী আব্বাস এর সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ না করায় কোন মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা আনোয়ারার সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সরোয়ার জামাল নিজাম বলেন “আমার এলাকাতে ঈদের দিন থেকে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। কর্ণফূলী উপজেলাতে নির্বাচনের পরেই এ কার্যক্রম শুরু হবে”।
অন্যদিকে এ বিষয়ে আমাদের প্রতিবেদক দক্ষিণ জেলা বিএনপিতে কতটি ইউনিট রয়েছে। আর কতটি উপজেলায় ইতিমধ্যে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম চালু করেছে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম অপারগতা প্রকাশ করে জানান, বিএনপিতে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে। পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন দলীয় ভাবে।
এদিকে লক্ষ্যমাত্রা আশানুরুপ অর্জিত না হওয়ায় দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের কর্মসূচির সময়কাল কেন্দ্রীয়ভাবে আরো এক মাস বাড়িয়েছে।
বিএনপি সংবাদ সম্মলন করে ঢাকায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন দলের যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জানা যায়, এখন পর্যন্ত ৬০ লাখ ৫৬ হাজার ফরম বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি ফরমের দাম রাখা হয়েছে ১০ টাকা। সে হিসাবে বিএনপির তহবিলে জমা পড়েছে ৬ কোটি টাকার ও কিছু অর্থ। তবে বন্যার কারনে কম হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.