কুরআনে মুমিনদের উচ্চ মর্যাদার ঘোষণা
ওয়ান নিউজঃ অবিশ্বাসীরা দুনিয়ার এ ক্ষণস্থায়ী জীবনকে স্থায়ী ভেবে মায়া ও মোহে মুগ্ধ, আত্মহারা। এ কারণে তারা ঈমানদার লোকদেরকে বিদ্রুপ করতো। এ কারণেই তারা পরকালে হবে সর্বহারা।
আর কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তিরা অর্থাৎ তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিরা, যারা দুনিয়াতে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে, তাঁর বিধান মেনে চলে; তারাই পরকালের স্থায়ী জীবনে সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ-
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২১২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা পরকালীন জীবনে মুমিন বান্দার উচ্চ মর্যাদার কথা তুলে ধরেছেন। আর অবিশ্বাসীদের জন্য দুনিয়ার জীবনকে তাদের চাহিদা অনুযায়ী মনোমুগ্ধকর করে সাজিয়ে দেয়া হয়েছে। যা তারা চেয়েছে।
দুনিয়ার এ ক্ষণস্থায়ী জীবনে অবিশ্বাসীদের চাহিদা অনুযায়ী মনোমুগ্ধকর হিসেবে সাজানো হয়েছে। কারণ তারা দুনিয়ার লোভে-লাভে এত বেশি ব্যস্ত; এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের প্রতি তারা এত বেশি আসক্ত; পরকালীন বিশাল জীবনের বিষয়ে তারা শুধু অজ্ঞই নয় বরং অন্ধও বটে।
দুনিয়ার প্রভাব, সৌন্দর্য, ঐশ্বর্য লাভে তারা এত বিভোর হয়ে আছে যে, পরকালের চির নিশ্চিত ভালো কাজের সুখ এবং মন্দ কাজের দুঃখের কথা তরা চিন্তাও করে না। অবিশ্বাসীরা অজ্ঞতার অন্ধকারে নিপতিত। ভোগবাদের নেশায় তারা বেহুশ, প্রকৃত সত্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে।
ফলে জীবনের প্রকৃত মর্মার্থ উপলব্দি করতে তারা হয়েছে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এ ব্যর্থতা ও মূর্খতা শুধু যে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করছে তাই নয়, বরং কল্যাণকামী, সত্য সন্ধানী, দুনিয়ার সুখ বর্জনকারী, কষ্ট স্বীকারকারী আল্লাহ ভীরু লোকদেরকে তারা উপহাস করতেও দ্বিধা করতো না।
কাফের, মুশরিক, ইয়াহুদি, মুনাফেকদের উপহাসের জবাবে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের উচ্চ মর্যাদার কথা ঘোষণা করেছেন। যেদিন অবিশ্বাসীরা অবহেলিত ও বিপদগ্রস্ত হবে; ধ্বংস তাদের অনিবার্য হবে; সেদিন আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় কষ্ট স্বীকারকারী, আল্লাহকে ভয়কারী ব্যক্তিদের উচ্চ মর্যাদা দান করবেন।
উপরন্তু ইতিহাস সাক্ষী!
যে মুসলমানদেরকে কাফেররা উপহাস করতো, আল্লাহ তাআলা অতি অল্প সময়ের মধ্যে এ উপহাসকারী বনু নজির ও বনু কুরায়যা গোত্রের অগাধ ধন-সম্পদের মালিকানা মুসলমানদেরকেই দান করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, আল্লাহ তাআলা রোম ও পারস্য সম্রাজ্যও মাত্র এক যুগের ব্যবধানে মুসলমানদের অধীন করে দিয়েছিলেন।
মুসলমানরা যখন আল্লাহর প্রতি ঈমানের বলে বলীয়ান হয়েছিল, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনিন্দ্য সুন্দর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ছিল, তখন আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ ভূমির কর্তৃত্ব দান করেছিলেন।
এভাবেই পবিত্র কুরআনের ঘোষণা দুনিয়াতেও বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। আর পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে তিনি মুমিন মুসলমানকে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করবেন।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২১১ নং আয়াত
পরিষেশে…
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের বিধান পালন করে, নবির আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ইসলামে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ করার মাধ্যমে দুনিয়া পরকালের কল্যাণ লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.