কর্মসংস্থানে বিসংবাদ,শিল্পায়নে উৎসাহ জোগাতে হবে

 

 

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের যে ঊর্ধ্বগতি ছিল তা হ্রাস পেয়েছে। কর্মসংস্থানের এই নেতিবাচক অবস্থা দেশে বেকারত্ব বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে।

দেশের প্রধান শিল্প গার্মেন্ট খাতে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ৩ লাখ ২০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। কর্মসংস্থানের এই হার কমতে কমতে বর্তমানে ৬৪ হাজারে এসে ঠেকেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এ সময় কর্মক্ষম অর্থাৎ ১৫ বছরের বেশি বয়সের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। বিপরীতে কর্মসংস্থান হয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে। ওই সময়ে যে হারে কর্মক্ষম জনশক্তি বেড়েছে কর্মসংস্থান বেড়েছে তার চেয়ে কিছুটা হলেও বেশি হারে। অন্যদিকে ২০১০ সাল-পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থানের গতি উল্টোপথে ধাবিত হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যানুসারে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আগের চেয়ে বাড়লেও কর্মসংস্থানের হার ব্যাপকভাবে কমেছে। আলোচ্য সময়ে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কর্মক্ষম জনশক্তি বৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এর বিপরীতে কর্মসংস্থানের হার ছিল বছরে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বাস এখন ঢাকায়, শিল্প খাতের ৪৫ ও সেবা খাতের ৩৭ শতাংশের কর্মসংস্থান হয় দেশের রাজধানী ও প্রধান নগরীতে। জমির সীমাবদ্ধতায় দেশের সব অংশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করা যাচ্ছে না। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের বড় শহরগুলোও বিনিয়োগের বিকল্প স্থান হয়ে উঠতে পারেনি। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০১০ সাল থেকে ঊর্ধ্বমুখী হলেও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছে না। অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাধা বলে বিবেচিত হচ্ছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ওষুধশিল্পের রপ্তানি বাড়লেও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হিসেবে এ দুটি শিল্প কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। কর্মসংস্থানের গতি শ্লথ হয়ে পড়ায় দেশের মানুষ উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেকারত্ব বৃদ্ধি যুবসমাজের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। এ সমস্যার সমাধানে কর্মসংস্থানে গতি আনতে হবে। শিল্পায়নে উৎসাহ জোগাতে হবে।

মিজান উর রশিদ মিজান

সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত উখিয়া, কক্সবাজার 

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.