কর্ণফূলী উপজেলা নির্বাচনে নৌকার তিন প্রার্থীর বিজয়-বিএনপির বর্জন

জে,জাহেদ চট্টগ্রাম ব্যুরোচিফঃ

বহু প্রতিক্ষিত নবসৃষ্ট কর্ণফূলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রার্থী ফারুক চৌধুরী ৪৩,৯৮৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী (ধানের শীষ) এডঃ এসএম ফোরকান পেয়েছেন ৬,৬৯৬ ভোট।
উল্লেখ্য সকাল সাড়ে ১০টার সময় বিএনপি সমর্থিত তিন প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করে। বর্জনের ঘোষনায় ৩০ মিনিটে উপজেলার বাকি কেন্দ্র হতে ধানের শীষ সমর্থিত এজেন্টেরা ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করেন বলে সরেজমিনে দেখা যায়।
২৪শে সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন শেষ হয়েছে বলে রাত ৮টার দিকে উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও কর্ণফূলী সহকারী রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ আবু ছাইদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করে নিশ্চিত করেন।
গত জুলাই মাসে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। পরে ২০শে আগষ্ট নির্বাচনের কথা থাকলেও বন্যার কারনে পিছিয়ে ২৪ই সেপ্টেম্বর কাংখিত দিন ধার্য করা হয়। এ নির্বাচনে ৩(তিন) পদে দলীয় প্রতীকে এবারে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ভোট পেয়েছেন নিম্নে—
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে: আওয়ামী লীগের ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩৯৮৬ ভোট। বিএনপি প্রার্থী এসএম ফোরকান (ধানের শীষ) প্রতীকে পেয়েছেন ৬৬৯৬ ভোট ও ইসলামিক ফ্রন্টের জাহাঙ্গীর কবির রিজভী চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ১২৫১ ভোট। মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ৫১,৯৩৩ ভোট এবং বাতিলকৃত ভোট ১৪৯১। সর্বমোট ৫৩,৪২৪ ভোট মোট ভোটের শতকরা ৪৯%।
ভাইস চেয়ারম্যান পদেঃ
আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিদারুল ইসলাম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪০,৫২৭ ভোট। বিএনপিরর প্রার্থী হাজী মুহাম্মদ ওসমান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬,৩১০ ভোট। ইসলামী ফ্রন্টের মাওলানা মুছা মোমবাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩,৯৫৭ ভোট ও ইসলামিক ফ্রন্টের নাছির আহমদ চেয়ার প্রতীকে ৮৪২ ভোট পেয়েছেন। সর্বমোট ৫৩,৪৩৩ ভোট যার মধ্যে অবৈধ ভোটের সংখ্যা ১৭৯৭ ভোট। শতকরা ৪৮% ভোটার ভোটাধিকার প্রকাশ করেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেঃ
আওয়ামী লীগের প্রার্থী বানাজা বেগম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৪২,৫০১ ভোট। বিএনপির প্রার্থী উম্মে শামীমা মিরজান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৬৯৩৯ ভোট ও জাতীয় পার্টির মুন্নি বেগম লাঙ্গল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ২০৯৯ ভোট। যার মধ্যে বৈধ ভোটার সংখ্যা ৫১,৬১৭,অবৈধ ভোটের সংখ্যা ১৭৪৫ বলে নিশ্চিত করেন রির্টানিং কর্মকর্তা।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচনে ৫টি ইউনিয়নে ৪২টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলো প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার ৭৯৯ ভোট। পুরুষ ৫৩ হাজার ৫৯৯ এবং মহিলা ৫৪ হাজার ২০০ ভোট। প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায় মোট ভোটের ৫০% ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।

বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ প্রসংঙ্গে সংবাদ সম্মেলন হতে জানা যায়, অভিযোগ তোলেন এজেন্ট বের করে দেওয়া, এজেন্ট ঢুকতে না দেয়া, কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক ব্যালটে সীল মেরে ভোট প্রদানের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেন বলে জানান বিএনপির প্রার্থীরা।
বিএনপির উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম ফোরকান জানান, সকাল ৮টা থেকে উপজেলার ৪২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কিন্তু বেশিরভাগ কেন্দ্রে তাদের এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কোনো কোনো কেন্দ্র থেকে এজেন্টকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
সবকটি কেন্দ্র ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর লোকজন জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ব্যালটে সীল মেরে ভোট প্রদান করছে। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এ সময় বিএনপি সমর্থিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. ওসমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উম্মে মিরজান শামীমও একই অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন।
বিএনপির তিন প্রার্থী বলেন, এটি কোনো নির্বাচন নয়, প্রহসন। দলীয় প্রার্থী ও প্রশাসন পরিকল্পিতভাবে একতরফা ভোটগ্রহণ করছে। অন্যদিকে তাৎক্ষনিকভাবে বিজয়ী প্রার্থীর কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.