কর্ণফুলীতে বিলাসবহুল পাজেরোতে সরকারি লোগো লাগিয়ে পরিবহনকালে ৫০ হাজার পিচ ইয়াবাসহ: গ্রেফতার-১

 

জে,জাহেদ চট্টগ্রাম:

নগরীর কর্ণফুলীতে কালো রঙের একটি বিলাসবহুল পাজেরো থেকে আটক করা হয় এক কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ম‚ল্যের ৫০ হাজার পিচ ইয়াবা।

কালো রঙের মিতসুবিশি পাজেরো। সামনে একটি পতাকা লাগানোর দÐ (ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড),সরকারী লোগো যেমনটি উচ্চপদস্থ’ সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িতে লাগানো থাকে।

এ রকম একটি বিলাসী গাড়ি থেকে আজ সাড়ে তিনটার সময় ৫০ হাজার ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ মঈনুল ইসলাম নেতৃতে পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসিন,মোঃ জহির হোসেন, মোঃ কামরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্স এসআই ফরহাদ উদ্দিন, শিবু প্রসাদ চন্দ্র,এএসআই সš‘ শীল,বাপ্পু সেন অভিযানে ছিলেন ।

অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোঃ জসিম উদ্দিন নামের একজনকে। নগরীর প্রবেশদ্বার কর্ণফুলী উপজেলার ফকিরন্নির হাট রাস্তার মাথা শাহ আমির সিএনজি ওয়ার্কশপের এলাকা থেকে গাড়িটি আটক করা হয়।

ধারণা করা হ”েছ, গাড়িটি কক্সবাজার হতে পেকুয়া বাশখালী সড়ক হয়ে আনোয়ারা পার করে নগরীতে প্রবেশ করতেই আটক হন।

ডিবি পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচারের জন্য সরকারি গাড়ির মতো করে গাড়িটি সাজানো হয়েছিল।

সাধারণত ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডসহ গাড়ি দেখলে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি ভেবে পুলিশ থামায় না বা তল­াশি করে না। মুলত এ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাদক পাচারে ব্যস্ত অপরাধীরা।

চট্টগ্রাম মহানগর ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারি কমিশনার মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুর ২টার দিকে ফকরিন্নির হাট সড়কের পাশ থেকে গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়িনং চট্টমেট্রো-ঘ ১১-০২৮৯। গ্রেপ্তার মোঃ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থানায় মামলা করা হয়েছে।

মোঃ জসিম উদ্দিন পিতা জালাল আহমেদ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ জালিয়া পাড়া বলে তথ্য পাওয়া যায়। তিনি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছে ও ঢাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন বলে জানান। কর্মকর্তারা বলছেন, ইয়াবা বিক্রিতে বেশি লাভ দেখে এখানে বিনিয়োগও বেশি।

বিশেষ করে সরবরাহ বাধামুক্ত রাখতে তারা একেক সময় একেক ধরনের পথ বের করছে। যেকোন কৌশলে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে মহাব্যস্ত এসব মাদক পাচারকারীরা। যার অন্যতম সহজ উপায় মনে করেছে বিলাসবহুল সরকারি গাড়ির মতো দেখতে হুবহু গাড়ি ব্যবহার।

অনেক সময় সরকারি কর্মকর্তা বা প্রভাবশালী কারও হতে পারে ভেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এসব গাড়ি তল­াশি করেনা। মাদক পাচারকারীরা সেটাই খুঁজে নিয়েছে সুযোগ করে।

এ ছাড়া আমরা দেখতে পাই গাড়ির সামনে সাংসদ, পুলিশ, সাংবাদিক ইত্যাদি স্টিকার মেরেও মাদক পাচার চলে। মাঝে মধ্যে এরা ব্যবহার করে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগির পরিবহনের গাড়িসম‚হ।

এর আগেও নগরীতে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে অনন্যা আবাসিক এলাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ একটি টয়োটা র‍্যাভ ফোর গাড়ি আটক করে পুলিশ।

একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের স্টিকার মারা গাড়ি থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

এভাবে সরকারি ছন্মবেশ ধারণ করে এবং নানা গণমাধ্যমের স্টিকার লাগিয়ে মাদক পাচার করাতে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় সরকারি আমলা,পুলিশ অফিসার ও সাংবাদিককের।
গুটিকয়েক অপরাধীরা ম‚লত পুলিশকে বিভ্রান্তি ও ফাঁকি দিতে প্রায় এ কৌঁশলে ইয়াবা পাচারে জড়া”েছ।

যা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.