কর্ণফুলীতে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের নির্বাচনী সংক্রান্তে ট্রাইব্যুনালে মামলাঃ
জে,জাহেদ বিশেষ প্রতিবেদকঃ
নবসৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলার ১নং (খ) চরপাথরঘাটায় সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ ২০১৬ (ইউপি) নির্বাচনে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও ভোটকেন্দ্রে ফল জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়েছে।
নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ প্রথম আদালত চট্টগ্রামে গত পহেলা জানুয়ারী সোমবার ১/১৮নং ট্রাইবুনাল মামলা দায়ের করেন ক্ষতিগ্রস্ত ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী এম মঈন উদ্দিন।
মামলার বিবরণ সুত্রে জানা গেছে, ভিন্ন কেন্দ্রের ভোটার কতৃক বেআইনীভাবে কেন্দ্রদখল করে নৌকায় সীল মারা ও বাক্স পূর্ন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আইনী ব্যবস্থা না নেওয়া, ১নং ও ২নং কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলে পার্থক্য, নির্বাচনে প্রার্থীদের একেক জনের ভোট একেক রকম হওয়া, ব্যালট ছিনতাই,ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল, ১নং ও ২নং কেন্দ্রের ব্যালটে অফিসারের সীল না থাকা, ৮ নং কেন্দ্রে ব্যালটসহ প্রার্থী আটক, প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তির ভোট প্রদান সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়।
এতে বিগত ২০১৬ সালের ২৮মে ও ৩১শে অক্টোবরের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল পুর্বক পুনরায় ভোট গ্রহন অথবা বিতর্কিত কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের আবেদন করেন তিনি।
মামলার আর্জিতে প্রার্থীক আরো অভিযোগ তোলেন, উল্লেখিত কেন্দ্রের ফলাফল বানোয়াট,কারচুপিমুলক,প্রহসনমুলক,এখতিয়ার বহির্ভূত,ভয়েড এবিনিসিউ ও অকার্যকর ঘোষণা করা এবং চরপাথরঘাটা হামিদিয়া এতিমখানা মাদ্রাসা, চরপাথরঘাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,পশ্চিম চরপাথরঘাটা রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের চেয়ারম্যান পদের পুনঃনির্বাচনের আদেশ চেয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পটিয়া উপজেলা ও নবসৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলার ১নং খ) চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের উল্লেখিত তারিখের নির্বাচনী মাঠে।
মামলার এজহারসুত্রে পাওয়া তথ্যে, বিগত ২০১৬ সালের ২৮মে ও ৩১ শে অক্টোবরের নির্বাচনের সময় তৎকালিন সংশ্লিষ্ট এমন ১৫ জন কে প্রতিপক্ষ করে মামলা দায়ের হয়।
এতে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাবের আহমদ (নৌকা) কে ১নং মুল প্রতিপক্ষ ও মোঃ নুরুচ্ছাফা ফেরদৌস (লাঙ্গল) কে ২নং প্রতিপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ আবু সাঈদ, প্রিসাইডিং অফিসার যথাক্রমে: মোঃ শাহাজান,আবুল কালাম,ধনন্জয় চাকমা, মোঃ শহিদুল ওসমান,মোঃ আ.ন.ম শামসুদ্দিন,মোঃ হারুন অর রশিদ চৌধুরী,শ্যামল কান্তি দত্ত,মুহাম্মদ লিয়াকত হোসেন,মনসুর হামিদ,সুধির বরণ দেব,মোহাম্মদ সুমন,মোঃ কায়সার হামিদ সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করে।
ক্ষতিগ্রস্ত এম মঈন উদ্দিন জানান, কেন্দ্রে দেওয়া প্রিসাইডিং অফিসার স্বাক্ষরিত ফল বিবরণীতে এক ধরনের ফলাফল। উপজেলা হতে দেওয়া হয় আরেক ধরনের। সম্পুর্ণ জাল জালিয়াতি আর জনগণের স্বার্থে কেন্দ্র দখলের নির্বাচন আমি মানতে পারিনা। প্রার্থী যখন হাতেনাতে ব্যালট পেপারে সীল মারা অবস্থায় আটক হয়। তখন কোন নিয়মে নির্বাচন সুষ্ঠ হয় তাও আমি জানিনা ।
কেননা দেশে গনতন্ত্র থাকলে, জনগণের ভোটের অধিকার থাকতে হবে। মরা মানুষ আর প্রবাসীর ভোট কিভাবে নৌকায় পড়ে তা আমার বোধগম্য নয় মর্মে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি। বিষয়টি আদালতের নিয়মে চলবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
চরপাথরঘাটা হামিদিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসায় সে সময় দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার মোঃ শাহাজান এর যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত মামলায় প্রথম প্রতিপক্ষ চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছাবের আহমদ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে তিনিও একটি আদালত কতৃক ট্রাইবুনাল মামলার নোটিশ পেয়েছেন। যা আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতে লড়বে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে তৎকালিন দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ আবু সাঈদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি মামলার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ট্রাইবুনাল এর একটি মামলার নোটিশ কপি তারা হাতে পেয়েছেন। আদালতের মামলা যেহেতু বাকি প্রক্রিয়া আইনুনাগ প্রক্রিয়ায় হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.