কক্সবাজার কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি

ইমাম খাইর#
কক্সবাজার কারাগারে মোঃ মোস্তফা নামের কয়েদি আত্মহত্যার ঘটনায় পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ নভেম্বর) আত্মহত্যার ঘটনার পরপরই এই কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জেল সুপার নেছার আলম।

ডেপুটি জেলার সাইদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে রয়েছেন সার্জেন্ট ইন্সপেক্টর মামুনুর রশীদ ও একাউন্টেন্ট খন্দকার আজাদুর রহমান।

আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ রয়েছে।

কারা হাসপাতালের ডাক্তার মোঃ শামীম রাসেলকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জেল সুপার।

ওই কমিটিতে ডাক্তার শামীম রেজাকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

আগামী দুই দিবসের মধ্যে দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছে জেল সুপার নেছার আলম।

কয়েদি মোঃ মোস্তফা (২৫) গলায় ফাঁস লাগিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করেন।

তিনি একটি মারামারি মামলার আসামী হিসেবে কারাবন্দী ছিলেন। তার পিতার নাম রহিম উদ্দিন।

গত রবিবার তার ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

পুলিশি রিমান্ডে নেওয়ার আগেই আত্মহত্যা করে চিরতরে বিদায় নিলেন কয়েদি মোঃ মোস্তফা।

তবে, জেল সুপার নেছার আলম জানিয়েছেন, কারাবন্দীরা তাদের মেহমান। কয়েদী-হাজতিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের। কারাভ্যন্তরে কিভাবে আত্মহত্যা করল? এতে কারো অপরাধ-অবহেলা আছে কিনা? তা দেখা হচ্ছে।

তিনি জানান, ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একজন কয়েদী কারাভ্যন্তরে কেনইবা আত্মহত্যা করলেন? জেলখানায় আত্মহত্যার জন্য রশি কোথায় পেলেন? কারাগারের কেউ যন্ত্রণা দিয়েছে কিনা? এসব প্রশ্ন এখন ঘোরপাক খাচ্ছে। উত্তর পাচ্ছে না মোস্তফার স্বজনেরাও।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে এ সংক্রান্ত কিছু তথ্য দেন।

সোমবার রাতে তিনি জানিয়েছেন, কয়েদিকে মৃত অবস্থায় সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হাসপাতালে আনার পর প্রথমেই ‘স্ট্রোকে মৃত্যু’ হয়েছে বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ। ওই সময় কেউ সঠিক তথ্য দিচ্ছিল না।

মৃতের গলায় ‘দাগ’ দেখে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। পরে গলা পরীক্ষা করে দেখেন, ফাঁসের দাগ। জিহবা বের হওয়া অবস্থায়।

তারপর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থাকেও প্রথমে লাশের সঠিক তথ্য দিতে গড়িমসি করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.