কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ ৪৩ দস্যুর

ওয়ান নিউজ:  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করেছে উপকূলীয় এলাকার ছয়টি জলদস্যু বাহিনীর শীর্ষ ১২ দস্যুসহ ৪৩ জন সক্রিয় সদস্য।

তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আধুনিক এসএমজিসহ ৯৪টি বন্দুক ও প্রায় ৮ হাজার রাউন্ড গুলি জমা দেয়।

শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের মহেশখালী পৌরসভার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৭) অস্ত্র জমা ও আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপসহ সমগ্র উপকূলীয় এলাকায় বর্তমানে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। একাধিক বাহিনীর শত শত সদস্য সমুদ্র উপকূলীয় পাহাড়ী এলাকায় ত্রাস চালিয়ে আসছিল।

আত্মসমর্পণ করা সন্ত্রাসীর মধ্যে আনজু বাহিনীর ২৪টি অস্ত্রসহ ১০ জন, রমিজ বাহিনীর আটটি অস্ত্রসহ দুইজন, নুরুল আলম প্রকাশ কালাবদা বাহিনীর ২৩টি অস্ত্রসহ ছয়জন, জালাল বাহিনীর ২৯টি অস্ত্রসহ ১৫ জন, আইয়ুব বাহিনীর নয়টি অস্ত্রসহ নয়জন এবং আলাউদ্দিন বাহিনীর একটি অস্ত্রসহ একজন রয়েছে।

জমাকৃত অস্ত্রের মধ্যে এসএমজি (বেলজিয়াম) একটি, রিভলবার একটি, দেশি পিস্তল দুইটি, দেশি-বিদেশি একনলা বন্দুক ৫২টি, দোনলা দুইটি ওয়ান শুটারগান ১৯টি, থ্রি কোয়াটার গান ১৫টি এবং ২২ বোর রাইফেল রয়েছে দুইটি। এছাড়া সাত হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গুলি।

তালিকাভুক্ত এসব সন্ত্রাসী তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় জানিয়েছেন। এমন পটভূমিতে র‌্যাবের উদ্যোগে বড় আয়োজনের মাধ্যমে এ আত্মসমর্পন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হচ্ছে।

এদিকে মহেশখালী-কুতুবদিয়া এলাকার এসব সন্ত্রাসী আইনের আওতায় চলে আসার ঘটনায় খুশি উপকূলীয় এলাকার মানুষ।

র‌্যাব কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. মেহেদী হাসান বলেন, যারা আত্মসমর্পণ করেছে, তাদের মধ্যে এমনও সন্ত্রাসী আছে যার একজনের সবোর্চ্চ ৪১টি মামলা রয়েছে। প্রথম দফায় ৪৩ জন সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করলে দ্বিতীয় ধাপে আরো ২০০ থেকে ২৫০ জন সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণের বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।

তিনি বলেন, শুধু আত্মসমর্পণে পরে তাদের মামলাগুলো আইন অনুযায়ী চলবে। তবে আইন সমুন্নত রেখে মামলার বিষয়ে যতোটা সহযোগিতা করা যায় তা করবে র‌্যাব। এছাড়াও তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর পাশাপাশি পুনর্বাসনের বিষয়েও উদ্যোগ নেয়া হবে। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আত্মসমর্পণ করা সন্ত্রসীদের প্রত্যেককে আট লাখ করে পর্যায়ক্রমে টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। এছাড়া মহেশখালী- কুতুবদীয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উললাহ রফিক, সংসদ সদস্য কক্সবাজার রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.