এম.এইচ আরমান:
নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাত কক্সবাজার জেলা সমুদ্রজলের এই রহস্যময় জেলার সৌন্দর্যরূপের আড়ালে বলা হয় ইয়াবার রাজ্য এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার শহর থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃত। বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। এমনি এক জেলায় বাংলাদেশ পুলিশের একজন চৌকস কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে যোগদান করেন মো: ইকবাল হোসাইন।
তার আগেও তিনি সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সফলতার সাথে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন।ব্রাহ্মণবাড়িয়া পেয়েছিলেন জেলার সকল পেশাজীবি মানুষের ভালোবাসা। পেয়েছিলেন ১০০ উপরে বিদায়ী অনুষ্টান যা বাংলাদেশ পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হয়ে পাওয়া বিরল দৃষ্টান্ত। মাঠ পর্যায়ে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মানে সেকেন্ড ইন কমান্ড বলা হয় জেলা পুলিশের। দায়িত্ব পালনের থাকে সীমা রেখা, তবুও এই মানুষ’টা সকল সীমা রেখা পেরিয়ে জয় করেন তরুণ-যুবক থেকে বয়স্ক মানুষের মন। হয়ে উঠে আবেগ-অনুভূতির ইকবাল হোসাইন, করোনা দুর্যোগে মুহুর্তে ,কক্সবাজার করোনা তহবিল গড়ে তুলেন। যার পিছনের মূল নায়ক ছিলেন ইকবাল হোসাইন।
এই তহবিলের মাধ্যমে হাজার হাজার হতদরিদ্র মানুষের পাশে ছিলেন। করোনা দুর্যোগে রাতের অন্ধাকারে যখন কক্সবাজার জেলার পথ শিশু’রা পুলিশের গাড়ি দেখলেই পিছনে ছুটে বেড়াতেন একটু খাবার পাবে বলে,গাড়ি থেকে খাবার নিয়ে মাঝ-রাতে ছুটে যাওয়া মানুষের নাম ছিল ইকবাল হোসাইন। এই যুগে এই গুলো কাল্পনিক নয় কক্সবাজার জেলা পুলিশ তৈরী করেছিলেন সেই দৃষ্টান্ত যা মিডিয়ার চোখ এসেছিল।
কক্সবাজার জেলা কে ইয়াবা ও মাদক মুক্ত করতে রেখেছিলেন কঠোর ভূমিকা যা ইতি পূর্বে প্রমানিত বিগত সময়ে মিডিয়ার মাধ্যমে সকলের চোখে আসে।মানবিক এই পুলিশ কর্মকর্তা এসেছিলেন সমুদ্ররের পাড়ে এক অচেনা মানুষ হয়ে,চলে যাচ্ছে জেলার সকল মানুষের আস্থা,ভরশা, ভালবাসার আশ্রয়স্থল হয়ে।
এইত কিছু দিন আগে গুটা বাংলাদেশ যখন কক্সবাজার জেলা নিয়ে আলোচনায়। তিনি ছিলেন আলোচনা সমালোচনার সকলের উর্ধে,আসবেই কেন তিনি মুক্তিযোদ্ধ’র চেতনায় বিশ্বাসী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা’র গর্বিত সন্তান বাবা ছিলেন একজন শিক্ষক বাবার দেখানো সততা আর আর্দশে পথে যে তিনি আজ ইকবাল হোসাইন।
নীতি আদর্শ আর লক্ষ্যের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারা একজন সফল মানুষ। বদলি আর্দেশ আসার পর থেকেই কক্সবাজার জেলা সংবাদ কর্মী থেকে শুরু করে জেলার সকল পেশার মানুষ আবেগ-আপ্লুত হয়ে নিজের ফেসবুক টাইম লাইনে লিখে যাচ্ছেন?
কেউ লিখছেন যা চাইনি তাই হল? আবার কেউবা লিখছেন ইকবাল হোসাইনের সাথে পরিচয় কালিন স্মৃতি, কেউ লিখছেন একজন জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা কেমন করে এত সাধারণ ও সুন্দর মনের মানুষ হতে পারেন।
কেউ লিখছেন বিপদে ভরসা করার মত ইকবাল ভাইয়ের মত মানুষ কে হারালাম। একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে এর থেকে সফলতা আর কি হতে পারে ? পুলিশ সকলের কাছে ভালো হতে পারে না, এইটাই স্বাভাবিক, কাজ টাই অপরাদ দমন,কারো কাছে ভালো কারো কাছে খারাপ। ইকবাল হোসাইন’রা পারে বটে দায়িত্ব পালন করতে এসে পোশাকের বাইরে গিয়ে মিশে যায় সাধারণ মানুষের মণিকোঠায়।
এইটাই ত চেয়েছিলেন ৭১’র ৩০ লক্ষ শহীদ। এইটাই ছিল জাতি’র জনক শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ। মুক্তিযোদ্ধের চেতনা বিশ্বাসী এই পুলিশ কর্মকর্তা এসেছিলেন অচেনা একজন ইকবাল হোসাইন হয়ে। দুই বছরের কিছু সময় দায়িত্বপালনে মাধ্যমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কক্সবাজার জেলার আজ সকলের পরিচিতি ইকবাল হোসাইন, ভালোবাসো তাই, ভালোবেসে যাই’এই স্লোগান নিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত মেধা দীপ্ত সততার নীতি আর্দশ লালন করা চৌকস এই বিদায়ী কর্মকর্তা। গত (২১ সেপ্টেম্বর) আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে মো: ইকবাল হোসাইন কে (ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার) বদলি করা হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.