ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশে আড়াই কোটি মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য। কিন্তু কর দেন মাত্র ২৫ লাখ মানুষ। এটি বৈষম্যর সবচেয়ে খারাপ রূপ। বর্তমানে বাংলাদেশে বৈষম্য ও অসমতার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘৪৩ হাজার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের হাতে এখন সমগ্র ব্যাংক আমানতের অর্ধেক পুঞ্জিভূত।’
রবিবার (২৩ মে) ‘বৈষম্য হ্রাস ও শোভন সমাজ প্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্র-সরকার টাকা পয়সা পাবে কোথায়’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘সমাজকে আরও শোভন করার জন্য শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে হবে। কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের আলোকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় একমুখী শিক্ষার প্রচলন করতে হবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের বড় অংশকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘২৫ লাখ ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা দিতে ব্যাংকের ম্যানেজাররা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তারা চেনা জানা লোকদেরই ঋণ দিতে ইচ্ছুক। এ সমস্যা সমাধানে বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশন, পিকেএসএফ-কে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতায়িত করতে হবে। প্রয়োজনে এই উদ্যোক্তাদের ১ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে হবে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের আশ্রয় নিতে হবে।’
অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সদ্য প্রকাশিত ‘বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র: ভাইরাসের মহাবিপর্যয় থেকে শোভন বাংলাদেশের সন্ধানে’ গবেষণা গ্রন্থের বিষয়বস্তুর ওপর ওয়েবিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। এ গবেষণা গ্রন্থের ওপর ১৩ সিরিজের জুম ওয়েবিনার এটি।
ওয়েবিনারে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বিশ্বের নিরাপত্তা বিধানের প্রধান দায়িত্ব যে বৃহৎ শক্তিগুলোর, তারাই মানুষের ধ্বংসযজ্ঞ ঘটানোর কাজটি করছে। বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ এবং যুদ্ধাস্ত্রের জন্য যে পরিমাণ ব্যয় করা হয়, তার ১ শতাংশ টাকাও মানুষের জন্য ব্যয় করা হয় না। বাংলাদেশে ধনিকশ্রেণির বৃদ্ধির হার বিশ্বে সর্বোচ্চ, একইসঙ্গে পরিবেশ দূষণের হারও সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে বৃহৎ প্রকল্পগুলোর নির্মাণ ব্যয় বিশ্বের সর্বোচ্চ। কারণ, এরমধ্যে আছে ভয়াবহ দুর্নীতি, যেটা সম্ভব হয় জবাবদিহির অভাবে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান শোভন সমাজ গড়তে হলে বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করতে হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, রূপপুর, মাতারবাড়ির মতো প্রাণবিনাশী বা ভুল প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করতে হবে। কারণ, এগুলো মানুষের দারিদ্র্য বৃদ্ধি করছে।’
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.