আলোচনায় ‘ডিজিটাল গুপ্তচর’
উদিসা ইসলাম
বাংলাট্রিবিউন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক সাংবাদিকই ব্যবহার করছেন ‘#আমি গুপ্তচর’ হ্যাশট্যাগটিডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর কয়েকটি ধারা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়ার ঝড় উঠেছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে প্রস্তাবিত আইনটির ৩২ নম্বর ধারা। এই ধারাটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সাংবাদিকরা। এই ধারায় উল্লেখ করা ‘ডিজিটাল গুপ্তচর’ শব্দযুগলও এর মধ্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে শুরু করেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ লিখতে শুরু করেছেন, ‘আমি গুপ্তচর’।
কী আছে ৩২ ধারায়?
প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ৩২ ধারায় বলা আছে, যদি কোনও ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনও সরকারি, আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনও সংস্থার কোনও ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন; তাহলে ওই ব্যক্তির এই কাজ কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে মানিক মুনতাসিরের স্ট্যাটাস৩২ ধারায় সংঘটিত এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। কেউ যদি এই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার করেন, তাহলে তার সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা বলছেন সাংবাদিকরা
মন্ত্রিসভায় পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রকাশের পর বিশেষ করে এই আইনের ৩২ নম্বর ধারা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এই আইন পাস হলে সাংবাদিকরা কতটা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা চালিয়ে যেতে পারবেন— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাদের অভিযোগ, কোনও সাংবাদিক যদি ঘুষ লেনদেনের মতো কোনও অন্যায়-অবিচার গোপনে ধারণ করেন, এই আইনের ফলে তার সেই অনুসন্ধানকেও ‘ডিজিটাল গুপ্তরচরবৃত্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা সম্ভব। ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুযোগ সংকুচিত হয়ে যেতে পারে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.