মোঃ ফারুক পেকুয়াঃ
পেকুয়ায় আলম ডাকাত নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাসহ ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
আলম ডাকাতের পিতা আবুল হোছন বাদি হয়ে বুধবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চকরিয়ায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলাটি দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পেকুয়া থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেছে আদালত।
মামলার আসামীরা হলেন, রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল ইসলাম টিপু, রাজাখালী ইউপির সদস্য আ’লীগ নেতা নেজাম উদ্দিন নেজু, যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন, ইউপি সদস্য আজম উদ্দিন আজু, ওয়ার্ড আ’লীগের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন, আ’লীগ নেতা বদিউল আলম, আ’লীগ নেতা জামাল উদ্দিন, উপজেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবদীন ও মিছবাহ উদ্দিন।
জানা গেছে, গত ১৯নভেম্বর রাতে বন্দুকযুদ্ধে আলম ডাকাত নিহত হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীরা মিষ্টি বিতরণসহ সন্তোষ প্রকাশ করলেও তার পরিবারের লোকজন ও তার বাহিনীর সদস্যরা আ’লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গিকার করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আলম ডাকাতের ভাই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে আ’লীগ ও যুবলীগ নেতাদের এলাকা থেকে বিতাড়নের শপথও গ্রহণপূর্বক বৈঠকও করেন। যার প্রেরিপেক্ষিতে বেশ কয়েকজন আ’লীগ ও যুবলীগ নেতাদের জড়িয়ে মামলা দায়ের করে হয়রানি করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন তারা।
রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল ইসলাম টিপু বলেন, রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে বলিষ্ট ভুমিকা পালন করার পর থেকে স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র এবং নৌকার বিরোধী পক্ষের ডাকাত সন্ত্রাসরা আমার প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল। তারপরও রাজাখালীতে আ’লীগ ও যুবলীগকে সুসংগঠিত করতে সব সময় কাজ করে গেছি। বর্তমানে মাননীয় এমপি জাফর আলম মহোদয়ের হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছি। যার কারণে চক্রান্তকারীরা আবারো চক্রান্ত শুরু করেছে। পেকুয়ার শীর্ষ ডাকাত আলম বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর এলাকাবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অথচ তার এবং তার পরিবারের সাথে আমার কোন ধরণের বিরোধ ছিলনা। তারপরও নৌকা বিরোধী এক জনপ্রতিনিধির ইশারায় সামনের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে আদালতের একটি মামলায় আসামী করে হয়রানি করার চেষ্টা করছে আমাকে। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ মামলাটি সঠিক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হউক।
আ’লীগ নেতা ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন বলেন, আলম ডাকাত উপকূলের শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং ডাকাত তা প্রশাসনসহ এলাকাবাসী যতেষ্ট অবগত। আলম ডাকাত নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হলে আমি তা জানতে পারি। কিন্তু তার ভাই মনিরুজ্জামান আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে তাতে আমাকেসহ আ’লীগ, যুবলীগের বেশ কয়েকজনকে মিথ্যাভাবে আসামী করে। তারা রাজাখালীর আ’লীগকে নিশ্চিহৃ করার পায়তারা শুরু করেছে।
স্থানীয় বেশ কয়েক আ’লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ডাকাত আলম এর অত্যাচার আর নির্যাতনে সাধারণ জনগণ অতিষ্ট ছিল। তার ভয়ে ১০/১২ বছরের মধ্যে মেয়ে বিয়ে দিতে হত। তারপরও অনেকে তার লালসা থেকে মুক্তি পায়নি। এলাকায় কোন উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে তাকে চাঁদা দিয়ে করতে হত। সর্বশেষ ডাকাত আলম নিহত হলে এলাকায় শান্তির পরিবেশ বিরাজ করলেও তার ভাই মনিরুজ্জামানসহ বাহিনীর সদস্যরা আ’লীগের নেতাকর্মীদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে। তাদের চক্রান্ত কখনো সফল হতে দিবেনা রাজাখালীর বাসিন্দারা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম বলেন, উপকূলের শীর্ষ ডাকাত ও সন্ত্রাসী ছিল আলম। তার অস্ত্রের ভয়ে এলাকাবাসী ছিল জিম্মি। তিনি ডাকাত দলের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর ১২টি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা করেছে বলে শুনেছি। কাগজপত্র এখনো পায়নি। এঘটনায় নিরহ কোন মানুষ হয়রানি হবেনা বলে আমি আশ্বস্থ করতেছি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.