আনোয়ারার উপকূলীয় চরে অতিথি পাখিতে মূখর

জে,জাহেদ চট্টগ্রামঃ

প্রকৃতিতে চলছে শীতের হাতছানি। শীতের আগমনে প্রকৃতিতে লেগেছে তার নান্দনিক ছোঁয়া। পড়েছে সাজ সাজ রব।

সমুদ্র উপকূলীয় ও পাহাড় ঘেরা এলাকায় বিকেল থেকে অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ।

প্রকৃতির এ শীতল পরিবেশে আনোয়ারা উপকূলজুড়ে বাড়ছে অতিথি পাখির আগমন।

উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন রায়পুরের বার আউলিয়া থেকে পরুয়াপাড়া বাতিঘর পর্যন্ত গহিরার চরে ও পার্শ্ববর্তী পারকি সমুদ্র সৈকতে দেখা মিলছে অতিথি পাখির।

এছাড়া কোরিয়ান ইপিজেড বাগানে ও মেরিন একাডেমির ম্যানগ্রোভেও বিকেলে শোনা যায় নানা পাখ-পাখালির মধুময় কলতান।

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় অতিথি পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠছে জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ এসব এলাকা।

সেখানে অতিথি পাখি দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুরা।

সরেজমিন গহিরার চরে গিয়ে দেখা যায়,বিচিত্র পাখ-পাখালির কিচির মিচির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠেছে এখানকার জনপদ।

বছরজুড়ে প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ গহিরার চরে হরেক রকম পাখির কলকাকলীতে সরব থাকলেও শীতে যেন নতুন প্রাণ পায় পাখিদের সুরে।

শীত মৌসুমে আবার এদের সঙ্গে যোগ হয় পৃথিবীর অন্যান্য অ ল থেকে আগত পাখির দল।

ইতোমধ্যে হাজারও প্রকৃতিপ্রেমীকে আকৃষ্ট করেছে গহিরা চরের বর্ণিল অতিথি পাখিরা।

এবারে অতিথি পাখির মধ্যে যেসব পাখি দেখা গেছে তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কুন্তি হাঁস,জিরিয়া হাঁস,পাতারি হাঁস,রাজ হাঁস,নীলশির,কানি বক,ধূসর বক,সাদা বক,জল ময়ূর,ডুবুরি,পানকৌড়ি,গঙ্গা কবুতর, দলপিপি,কাস্তেচড়া,রাজসরালি,ঈগলসহ নাম না জানা অসংখ্য পাখি।

শীতে কাবু এ পাখিগুলো একটু উষ্ণতা নিতে কয়েক হাজার মাইল দূর থেকে এসব স্থানে ছুটে আসে।

শীত মৌসুম শেষ হওয়ার পর অধিকাংশ পাখি ফিরে গেলেও পানকৌড়ি ও বিরল প্রজাতির কিছু বক পাখি এখানেই ঘরবসতি গড়ে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে পারকি সমুদ্র সৈকতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর অতিথি পাখির সংখ্যায় কমেছে বলে দাবি করেছেন।

জেলা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও বারশত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ।

কারণ হিসেবে তিনি জানান,সিইউএফএল,কাফকো ও ড্যাপ সার কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য যেনতেনভাবে নিস্কাশনের ফলে এখানকার জীবজগৎ,কীটপতঙ্গ আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে।

যার ফলে সৈকত এলাকায় আহারের অভাব থাকায় অতিথি পাখিরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অতি সহসা এসব কারখানার বর্জ্য নিস্কাশনে নিরাপদ ব্যবস্থা করা না হলে এলাকার জীববৈচিত্র অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

এছাড়া পাখির বিচরণ কেন্দ্রগুলো সরকারিভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হলে পর্যটকদের আরও সমাগম বাড়বে। শীতের এ মৌসুমে পর্যটন পিপাসুরা ইতোমধ্যে পারকি সৈকত,গহিরার চর ও কেইপিজেড এলাকায় আসতে শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গৌতম বাড়ৈ বলেন, উপকূলের জীববৈচিত্র সংরক্ষণে এসব পাখির লালন জরুরি। পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা সম্ভব না হলে শিগগির এ এলাকাটি পাখি শূন্য হয়ে যাবে।

অতিথি পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। কারো বিরুদ্ধে পাখি শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.